দিন বদলের স্বপ্ন নিয়েই ভোটের মাঠে সুবোধ-কন্যা

অচেনা হলেও নাম-গোত্রহীনা নন মোটেও! ছোট বামপন্থী দলের পতাকা হাতে ছোট্টবেলা থেকেই লড়ে যাচ্ছেন তিনি।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫৪
Share:

সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়

এক দিকে নামী অভিনেত্রী। রুপোলি পর্দার গ্ল্যামারের ছটা। অন্য দিকে দুঁদে আইনজীবী। পেশার সুবাদে কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে নানা রাজ্যে বিস্তৃত পরিচয়। আবার আরও এক দিকে রাজ্যের শাসক দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে কেন্দ্রের শাসক দলে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়া বিদায়ী সাংসদ। এই চেনা মুখের আড়ালে ময়দানে আছেন এক অচেনা।

Advertisement

অচেনা হলেও নাম-গোত্রহীনা নন মোটেও! ছোট বামপন্থী দলের পতাকা হাতে ছোট্টবেলা থেকেই লড়ে যাচ্ছেন তিনি। পতাকাটা চিনিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। ওই দলের হয়ে এ রাজ্যে তাঁর বাবাই প্রথম বিধায়ক। এবং বাংলার রাজনীতির অভিধানে তাঁর বাবার নামেই পাঁচ দশক আগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল অভিনব পরিচয়— ‘ঘেরাও মন্ত্রী’! প্রথম যুক্তফ্রন্ট সরকারের শ্রমমন্ত্রী থাকাকালীন ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে ঘেরাও কর্মসূচির ধারণা বাস্তবায়িত করেছিলেন সুবোধ বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্টে ছিলেন পূর্তমন্ত্রী। সেই ডাকসাইটে শ্রমিক নেতা সুবোধবাবুর কন্যা এ বার লোকসভা ভোটে প্রার্থী। রাজনৈতিক চর্চার ভরকেন্দ্র যাদবপুর থেকে।

সুবোধবাবু বিধায়ক ছিলেন জয়নগর থেকে। কন্যা সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসইউসি-র নানা সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে এসেছেন জয়নগর, কুলতলিতেই। ছোট বেলা অবশ্য কেটেছিল হাবড়ায়। সেখানে স্কুলে পড়াতেন মা। ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়ে নানা পথ পেরিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মফস্সল, গ্রামাঞ্চল হয়ে এখন যাদবপুরে ভোটের স্রোতে। সাংগঠনিক স্তরে এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভোটের বাক্সে তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করছে, তা নিয়ে প্রত্যাশা নেই সুজাতাদেবীর। তিনি সাফ বলছেন, ‘‘রাজনীতি তো শুধু নির্বাচনের জন্য নয়। সরকার বদল, দল বদলই শেষ কথা নয়। সমাজ বদল, দিন বদলের লড়াইটা দীর্ঘমেয়াদি। সেটাই করতে চাই।’’ তবু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন থাকে, এসইউসি-কে ভোট দিয়ে কী হবে? ভোট নষ্ট হবে! প্রার্থী বলছেন, ‘‘সরকার গড়তে যাচ্ছি বলে আমাদের ভোট দিন, এমন কথা তো বলছি না। কেউ সে কথা মনেও করছেন না। সাধারণ মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে গণ-আন্দোলনে এসইউসি থাকে। সেই গণ-আন্দোলনকেই শক্তিশালী করার জন্য মানুষের সমর্থন চাইছি।’’

একই যাদবপুরে এ বার লড়াইয়ে আছেন ছোট বামপন্থী দলের আরও এক প্রার্থী। পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক অনুরাধা পূততুণ্ডের কাছে নির্বাচন অবশ্য নতুন নয়। তবে তাঁর এ বার প্রার্থী হওয়া ঘিরে বাম শিবিরে নতুন ভাগাভাগি হয়েছে। রাজ্যে ১৭ বাম দলের জোটবদ্ধ লড়াইয়ের জেরে সিপিএমের কাছে একটি লোকসভা আসন চেয়েছিল পিডিএস। প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে পিডিএস নেতাদের আক্রমণের অভিমুখ অনেকটাই ঘুরে গিয়েছে সিপিএমের দিকে। অনুরাধাদেবীও দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের জন্য সিপিএমকে নিশানা করছেন, তির যাচ্ছে বিকাশ ভট্টাচার্যের দিকেও।

সুজাতাদেবী আপাতত কর্মিসভায় বেশি সময় দিচ্ছেন। সঙ্গে বলছেন, ‘‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিরদাঁড়া সোজা রেখে লড়ে যেতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন