Lok Sabha Election 2019

পাড়া ঘুরে ভোট দেখলেন নুসরত

সকাল পৌনে ন’টায় ১৬/১ পাম অ্যাভিনিউয়ের বহুতল থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বালিগঞ্জের মডার্ন হাইস্কুলে ভোট দিতে বেরোলেন নুসরত। পরনে লম্বা হাতা কালো ব্লাউজের সঙ্গে হলুদ-কালো চেক শাড়ি। কপালে ছোট কালো টিপ।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০২:১৬
Share:

টাকির রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের সামনে নুসরত জহান। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সবই করলেন চিত্রনাট্য মেনে। পরিচালকের কথা শুনে। সিনেমায় যেমন হয়। রবিবাসরীয় ভোটে যেন তেমনই করলেন নুসরত জহান রুহি।

Advertisement

রবিবারে মূলত বসিরহাট এবং টাকি শহরেই দেখা গেল নুসরতকে। শুধুমাত্র কয়েকটি বুথ পরিদর্শন করেই ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। ভোটের দিনেও ভিড় সামলাতে ‘রোড শো’ করলেন বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী।

সকাল পৌনে ন’টায় ১৬/১ পাম অ্যাভিনিউয়ের বহুতল থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বালিগঞ্জের মডার্ন হাইস্কুলে ভোট দিতে বেরোলেন নুসরত। পরনে লম্বা হাতা কালো ব্লাউজের সঙ্গে হলুদ-কালো চেক শাড়ি। কপালে ছোট কালো টিপ।
ভোট দিয়েই দুধ-সাদা এসইউভিতে চেপে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে নুসরতের গাড়ি ছুটল।

Advertisement

ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে দশটা। টাকি রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলে ভোট কেমন হচ্ছে, জানতে গেলেন নুসরত। সঙ্গী বসিরহাট দক্ষিণের দলীয় বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস। তাঁকে নিয়েই কখনও ভোটের লাইনে থাকা মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে বাড়ির হাঁড়ির খবর নিলেন। ‘ঘরের মেয়ে’ হয়ে ওঠার চেষ্টায় বললেন, ‘‘ভোট কেমন হচ্ছে! বাড়িতে রান্না করে এসেছ! কখন রান্না করবে?’’ আবার দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়ানোর জন্য নুসরতের কাছে মহিলা ভোটাররা অনুযোগ করলে ধৈর্য ধরার পরামর্শও দিলেন তৃণমূল প্রার্থী।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে ধৈর্য কিন্তু হারালেন নিজেই। হাতের কাছে ছাতা আর ক্রিম না পেয়ে নুসরত তখন বিরক্ত। ছাতার বদলে শাড়ির আঁচল দিয়েই রোদ বাঁচালেন। একটু পরে ছাতা এল। কিন্তু ভোটের দিন ছাতা মাথায় দিলে ভোটাররা প্রশ্ন তুলবেন না? বাউন্সার সামলে সটান উত্তর , ‘‘প্রার্থীও তো মানুষ। তাই ছাতা আর সানগ্লাস রয়েছে। দেখুন যাঁরা ভোট দিতে আসছেন, তাঁরাও হয় সানগ্লাস পরেছেন বা ছাতা নিয়ে আসছেন।’’ এর পর শুধু সেলফি তোলার আবদার মেটানোই নয়। আচমকাই দন্ডিরহাটের উত্তরপাড়া ফুলবাড়িতে এসইউভির হুড খুলে রোড-শোও করলেন টলিউডের অভিনেত্রী। আবদার এল অদূরে দেবগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে যেতে হবে। ভিড়ে ঠেলে যেতেই হল। কয়েক মিনিট আগে নলকোঁড়া নরেন্দ্র কর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও উপচে পড়েছিল ভিড়। স্থানীয় বাসিন্দা মৃদুল ঘোষের কথায়, ‘‘এখানে কোনও প্রার্থী আগে আসেননি।’’

গত দেড় মাস অভিনেত্রী না নেত্রী এই দ্বন্দ্ব একাধিক বার ঘুরপাক খেয়েছে বসিরহাটের ইছামতী থেকে হিঙ্গলগঞ্জের কালিন্দীতে। শেষ লগ্নে এসে তার মীমাংসা অধরাই থাকল। নুসরতের জবাব, ‘‘আজীবন অভিনেত্রীই থাকব। আর নেত্রী অর্থাৎ নেতৃত্ব তো চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। নেতৃত্ব দিতে গেলে রাজনীতিই প্রয়োজন, তা কে বলল!’’ তাঁকে পুরোদস্তুর রাজনীতিক বললেই আপত্তি করছেন তিনি। বলছেন, ‘‘আমার কথাবার্তায় সে ভাবে রাজনীতির কথা পাবেন না। রাজনীতিক বললে ভুল হবে।’’ ‘রাজনীতিক’ নুসরত হতে আপত্তি থাকলেও বসিরহাটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হতে অবশ্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি।

বাড়িতে অসুবিধার কারণে ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে কেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে হল। ফেরার পথে মিনাখাঁর মাজমপুরের চারটি বুথের ভোট বুঝে শহরে পৌঁছলেন বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী। দিনের শেষে চড়া রোদ আর ধুলোর মাঝে অভিনেত্রী আর নেত্রীর দ্বন্দ্ব জিইয়ে রইল ইছামতীর পাড়ে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement