এই দেওয়াল লিখন ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে দেওয়াল লিখন: ‘কেন্দ্রে জনবিরোধী সরকার গড়ে তুলতে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কানাইয়ালালকে ভোট দিন’। যা নিয়ে রায়গঞ্জ তো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে সোমবার সকাল থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে। প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূলের প্রার্থীর সমর্থনে লেখা দেওয়ালে ‘জনবিরোধী’ কথাটা এল কোথা থেকে? এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য রায়গঞ্জের ৯ ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। তিনি, তাঁর স্বামী তথা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলীয় কর্মীরা সকাল ১১টা নাগাদ রমেন্দ্রপল্লি এলাকার ওই বাড়িটিতে যান। লেখার একটি অংশের উপরে সাদা রং লেপে আপাতত অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। খোঁজ চলছে, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল।
তৃণমূল অবশ্য এর জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছে। তৃণমূল কাউন্সিলর মমতার বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের নাম করে বিকৃত দেওয়াল লিখনের জন্য দলের তরফে বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে।’’ জবাবে বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, ‘‘ওই দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে তৃণমূলের মূর্খামি প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তাই তৃণমূল নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাসিন্দাদের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা গত শুক্রবার কানাইয়ালালের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার লেখার জন্য রমেন্দ্রপল্লি এলাকার ওই দেওয়ালটিতে সাদা রং করেন। ঠিক হয়, সোমবার কানাইয়া মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘রবিবার গভীর রাতে বিজেপির নেতা-কর্মীরা দেওয়ালে ওই সব কথা লিখে দিয়েছে।’’ বিজেপির তরফে অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়। নির্মল বলেন, ‘‘তৃণমূল যতই মিথ্যা বলুক, তাদের সন্ত্রাস, অপশাসন ও দুর্নীতির প্রতিবাদে এ বারে রায়গঞ্জে বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীই জিতবেন।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু হওয়ার পরে বীরভূম জেলা ময়ূরেশ্বরে তৃণমূলের দেওয়াল লিখনকে ঘিরে শোরগোল শুরু হয়। সেখানে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে লেখা দেওয়ালে লেখা হয় শঙ্খ ঘোষের একটি কবিতার কয়েকটি পংক্তি: ‘দেখ রে খুলে তিন নয়ন, রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। পঞ্চায়েত ভোটপর্বে রাজ্য জুড়ে যখন রক্ত ঝরছে, তখনই লেখা হয় এই কবিতা। তাকে তৃণমূলের দেওয়াল লিখনে ব্যবহারের মধ্যেও ‘বিরোধীদের অভিসন্ধি’ দেখছেন অনুব্রতরা।