ইভিএমে তৃণমূল প্রতীকে আতর, নালিশ কমিশনে

সিপিএমের অভিযোগ, সকালে কিছুক্ষণ ভোট-পর্ব ঠিকমতো চলার পরেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই স্কুলের দু’টি বুথের ইভিএমে শাসকদলের প্রতীক থাকা বোতামে আতর ঢেলে দেয়।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ ও সুচন্দ্রা দে

ইলামবাজার ও কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২৮
Share:

রয়টার্সের তোলা ফাইল চিত্র।

ইভিএমে শাসকদলের প্রতীকের বোতামে আতর ঢেলে ভোট ‘নিশ্চিত’ করার চেষ্টার অভিযোগ তুলল সিপিএম। কমিশনের নির্দেশে ওই ইভিএম পরীক্ষার পরে ফের ভোটগ্রহণ শুরু করা হয়। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ মানেনি।

Advertisement

সোমবার ঘটনাটি ঘটে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের জয়দেব কেঁদুলি অঞ্চলের সুগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সিপিএমের অভিযোগ, সকালে কিছুক্ষণ ভোট-পর্ব ঠিকমতো চলার পরেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই স্কুলের দু’টি বুথের ইভিএমে শাসকদলের প্রতীক থাকা বোতামে আতর ঢেলে দেয়। ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসার পরে ভোটারদের আঙুলে আতরের গন্ধ রয়েছে কিনা, তা যাচাইও করা হচ্ছিল। সিপিএমের তরফে এ নিয়ে সেক্টর অফিসারের কাছে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ পেয়ে কিছুক্ষণ ভোট-প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে ওই ইভিএম পরীক্ষা করা হয়। তার পরে ফের ভোটপর্ব শুরু হয়।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘ওই বুথের ভোটারদের অনেককে ভোটকেন্দ্রের ২০০ মিটার আগেই মুড়ি, ঘুগনি, জিলিপি খাইয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। ইভিএমে আতর ঢেলে ভোটারকে প্রভাবিত করারও চেষ্টা করা হয়।’’ ৬২ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসার উৎপল মণ্ডল বলেন, ‘‘বুথে তৃণমূল ও বিজেপির এজেন্ট ছিলেন। সিপিএম এজেন্ট দেয়নি। অভিযোগ কানে আসেনি।’’ ৬৩ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসার রাজেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘ইভিএমে আতর জাতীয় কিছু ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে, এমন কথা সেক্টর অফিসার ফোনে জানান। ওই যন্ত্র পরিষ্কার করে ভোট শুরু হয়।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল সন্ত্রাস করে ভোটে জেতার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ প্রতিরোধ গড়ে মোকাবিলা করেছেন।’’ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ইলামবাজারের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। মানুষ তাঁদের ভোট দেবেন না জেনেই রটানো হচ্ছে।’’

এ দিকে, কেতুগ্রামের খাঁজির কিউএ আজিম উচ্চবিদ্যালয়ের বুথে সকাল থেকেই দেখা যাচ্ছিল গোলাপি জামা পড়া এক ব্যক্তিকে। অভিযোগ, ভোটারদের হাত ধরে ভোটকক্ষে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বয়স্ক ভোটারদের হাত ধরে ইভিএমের বোতাম টিপে দিতেও দেখা যায় তাঁকে। বিরোধীদের অভিযোগ, সিরাজ নামে তৃণমূলের ওই কর্মী সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে দেদার ছাপ্পা দিয়েছেন। যদিও তৃণমূলের দাবি, ওই নামে দলের কেউ নেই। খাঁজির ১০৭ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে ভোটদানের গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগে বদলি করা হয়। আমগড়িয়ার একটি বুথেও ভোটকক্ষের পাশে ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন সবুজ শার্ট পড়া এক ব্যক্তি। অভিযোগ, কে, কোথায় ভোট দিচ্ছেন তা নজর রাখছিলেন তিনি। বিরোধীদের দাবি, মঙ্গলকোটের কাঁকোড়ার ১৩২ নম্বর বুথে লাইনে দাঁড়ালেই তৃণমূলের লোকজন এসে জিজ্ঞাসা করছিলেন— ‘কোন দলে ভোট দেবে’। উত্তরে সন্তুষ্ট হলে তবেই ঢুকতে দেওয়া হয়।

তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর যদিও দাবি, ‘‘২০১১ সালের আগে পর্যন্ত এখানে ভোটে বোমা-গুলি অবধারিত ছিল। এখন কোনও সন্ত্রাস নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন