অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষায়। ভগবানগোলার সভায়। নিজস্ব চিত্র
প্রচণ্ড গরমে সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভগবানগোলার সভায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন দু’জন তরুণী। যাঁরা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টানে এবং তাঁকে একটি বার চোখের দেখা দেখার জন্য ভগবানগোলার সভায় হাজির হয়েছিলেন। অসুস্থ দু’জন হলেন— লালগোলার আইড়মারির বাসিন্দা রেখা খাতুন ও ভগবানগোলার হাবাসপুরের সাহানা সুলতানা।
ওই দু’জনকেই কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় রেখা খাতুনকে। তবে সাহানা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভগবানগোলার কমান্ডার মোড়ে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী আবু তাহের খানের সমর্থনে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল। শুরু থেকেই সভায় চরম অব্যবস্থা দেখা গিয়েছে। এই ঠা-ঠা রোদে সভার মাঠে কোথাও প্রয়োজনীয় পানীয় জলের ব্যবস্থা ছিল না বলে অভিযোগ। এমনকি সভার মাঠে মঞ্চের সামনের কিছুটা অংশে ছাউনি থাকলেও বাকি অংশে কর্মী-সমর্থকদের জন্য মাথার উপরে কোনও ছাউনি ছিল না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই গরমের মধ্যে রোদে দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে আচমকা ‘সানস্ট্রোক’ হয় রেখা খাতুনের। রেখাকে সেখান থেকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় মঞ্চের ঠিক পিছনে ছায়া ঘেরা জায়গায়। অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা জানাজানি হতেই সভা মঞ্চের কাছাকাছি থাকা কয়েকজন পুলিশকর্মী ছুটে আসেন। তখন জলের বোতল থেকে মাথায়-মুখে জল ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা হয়। পরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে।
পরে সভাস্থল ছেড়ে দলনেত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পরেই গরমে ও ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন হাবাসপুরের সাহানা। সাহানার মা রাবিনা বিবি বলছেন, ‘‘এই দুপুরে ঠা-ঠা রোদের মধ্যে সভার মাথায় কোনও ছাউনি নেই। জলের ব্যবস্থা নেই। মেয়ে অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে চোখে-মুখে জল দেব, তাও পাইনি। শেষে মঞ্চের পাশে নিয়ে যাওয়ার পরে কয়েক জন জলের বোতল এনে দিলেন। আবার অ্যাম্বুল্যান্স আসতেও দেরি হয়।’’
অভিযোগ, সভাস্থলে অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও তা পৌঁছতে সময় লেগে যায় পাক্কা আধ ঘণ্টা। কারণ, অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াতের মতো কোনও পৃথক রাস্তা না থাকায় অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছতে দেরি হয়েছে বলে জানান এক তৃণমূল নেতা।
ওই তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘যে রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াত করার কথা ছিল, সেখানে দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের গাড়িতে ভর্তি ছিল।’’
কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘সভাস্থলে ৬টি অ্যাম্বুল্যান্স ছিল। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াতের পৃথক রাস্তা না থাকায় কিছু সময় দেরি হয়েছে। তবে দু’জনেই এখন বিপন্মুক্ত। এক জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।’’