ডাক্তারবাবু লোক ভাল, কিন্তু ভোটে?

অবাক তো হওয়ারই কথা। যিনি জীবনে কখনও রাজনীতি ধারে-কাছে নেই, বরং তরুণ চিকিৎসক হিসেবেই চেনে সকলে, তিনি হঠাৎ লোকসভা ভোটে প্রার্থী হলে কে না চমকাবে!

Advertisement

সম্রাট চন্দ ও সুদীপ ভট্টাচার্য

তাহেরপুর ও মাজদিয়া শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

মুকুটমণি। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বাদকুল্লা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে দিয়ে চলে গিয়েছে রানাঘাট-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক। তার ধারটাতেই দাঁড়িয়ে প্রণব বিশ্বাস। “আমাদের ডাক্তারবাবুই যে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়বেন, এ তো ভাবিইনি! বিশ্বাসই হচ্ছিল না।”

Advertisement

অবাক তো হওয়ারই কথা। যিনি জীবনে কখনও রাজনীতি ধারে-কাছে নেই, বরং তরুণ চিকিৎসক হিসেবেই চেনে সকলে, তিনি হঠাৎ লোকসভা ভোটে প্রার্থী হলে কে না চমকাবে!

কলকাতার এম আর বাঙুর থেকে আরও কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে গত অগস্টে নদিয়ার বাদকুল্লায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দেন মুকুটমণি অধিকারী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নামই ঘোষণা করে বিজেপি। আর তার পর থেকেই চেনা হিসেবগুলো পাল্টে যেতে শুরু করেছে। কৃষ্ণগঞ্জের নাঘাটার মাজদিয়া রেলবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মুকুটমণি। এমবিবিএস এসএসকেএম থেকে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কোয়ার্টারেই সাধারণত থাকেন। যে দিন ডিউটি থাকে না, মাজদিয়ার বাড়িতে ফিরে যান। মঙ্গলবারও আর পাঁচটা দিনের মতো ডিউটি করেছেন। ছুটি থাকায় এ দিন তিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেননি। আর আসবেনও না।

Advertisement

রোগী এবং সহকর্মীরা যা বলছেন, তাতে বছর তিরিশের নিপাট ভদ্র যুবা, যদিও খুব যে মিশুকে তা বলা যাবে না। বিয়ে করেননি, সিগারেট খান না। তবে চা চলে। কুমার শানু আর অরিজিৎ সিংহের গানের ভক্ত। পছন্দ বিলিতি সায়েন্স ফিকশান আর থ্রিলার মুভিও। স্থানীয় বাসুদেব ঘোষের কথায়, “উনি ডাক্তার হিসাবেও ভাল, মানুষ হিসাবেও।’’ একই কথা বলছেন হাসপাতালের কর্মীরাও।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কৃষ্ণগঞ্জের নিহত বিধায়ক তথা মতুয়া নেতা সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী, কোনও দিন রাজনীতি না-করা রূপালী বিশ্বাসকে মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাট কেন্দ্রে দাঁড় করিয়ে চমক দিয়েছিল তৃণমূল। প্রায় একই রকম আনকোরা মতুয়া মুখ মুকুটমণিকে দাঁড় করিয়ে পাল্টা চাল দিয়েছে বিজেপি। তাঁর বাবা ভূপাল অধিকারী এক সময়ে বাম ঘেঁষা ছিলেন, বছর দেড়েক আগে বিজেপিতে যোগ দিয়ে বর্তমানে দলের তফসিলি জাতি ও জনজাতি সেলের সহ-সভাপতি। মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।

সূত্রের খবর, মুকুটমণির মাথায় মুকুট ওঠার এটাই আসল চাবিকাঠি। নইলে নিজে তো কলেজ জীবনেও কখনও রাজনীতির ধার মাড়াননি তিনি। খটকা একটাই: নির্বিরোধী তরুণ ডাক্তারের কাছে এই মুকুট কাঁটার মুকুট হবে না তো? সকালে তৈরি হয়ে মাজদিয়ার বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন, যাবেন রানাঘাট। মুকুটমণি জানালেন, কাঁটা বেছে খাওয়া তাঁর ধাতে নেই। চারা নয়, পাকা মাছই বেশি পছন্দের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন