—ফাইল চিত্র।
এ বার একেবারে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের মাঠে গিয়েই হুঙ্কার ছাড়লেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ!
শিলিগুড়ি-নকশালবাড়ির পর বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে অমিতের দাবি, “ভবানীপুরেও পদ্ম ফুটবে।” তা সে যতই ‘দুর্নীতি, অত্যাচার বা তোষণের পাঁক তৈরি করুক না কেন তৃণমূল!’ শুধু তা-ই নয়, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় সব থেকে বেশি আসন দখলেরও হুঁশিয়ারি দিলেন অমিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ১৩ রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পর এ রাজ্যেও মোদী-রথ রুখবে না বলে হুঙ্কার তাঁর।
দলীয় সংগঠনের শক্তি বাড়াতে বুথ স্তরে অভিযান কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবেই এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ মমতার বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে যান অমিত। ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিতে পা রাখতেই অমিতকে স্বাগত জানানো হল ঢাক বাজিয়ে, ফুল ছড়িয়ে। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল সিআরপিএফ। ভরদুপুরে নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনী এড়িয়ে অমিতের কাছে যাওয়ার চেষ্টাও তখন বৃথা। তবে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত নিজেই এগিয়ে গেলেন সাধারণ মানুষের কাছে। ৬৯ নম্বর বুথের সভাপতিকে পাশে রেখেই তখন একমঞ্চে অমিত। আশপাশেই দাঁড়িয়ে-বসে লকেট চট্টোপাধ্যায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, বাবুল সুপ্রিয়, রাহুল সিংহেরা। তবে মাইক হাতে বলতে উঠে শাহ মনে করিয়ে দিলেন, এ রাজ্যে জমি শক্ত করতে তৃণমূল স্তরে গিয়েই হাতে হাত মিলিয়ে কাজ না করলে সাফল্য আসবে না। তিনি বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থে বুথের সভাপতি থেকে দলের সভাপতি সকলকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে।” কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্র, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’।
আরও পড়ুন
‘ছবিতেই তো দেখা যাচ্ছে হাত পেতে পয়সা নিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা’
এ দিন দুপুরে প্রথমে ভবানীপুরের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে যান অমিত। সেখানকার জনা পঁচিশেক বুথকর্মী-সমর্থকের সঙ্গে গোপন বৈঠকও করেন তিনি। তার পর চুনের মাঠে ভাষণ দিতে উঠে ফের এক বার দলীয় সংগঠনের শক্তি বাড়ানোয় জোর দেন অমিত। শুধু এ রাজ্যেই নয়, দেশ জুড়েই সাড়ে তিন লক্ষ কর্মী এ কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বুথে বুথে গিয়ে দলের বিস্তার ঘটাবেন তাঁরা। তবে এরই মাঝে খোদ মমতাকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গেলেন অমিত। তিনি বলেন, “বাংলায় তোষণের, অত্যাচারের রাজনীতি চলছে। তা থেকে বাংলাকে মুক্তি দেবে বিজেপি।”
চেতলায় দলীয় সমর্থকদের বাড়ির পথে অমিত শাহ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
পূর্ব পরিকল্পনামতো এর পর চেতলা লকগেটের বস্তিতে গিয়ে দলের তিন সমর্থকের বাড়িতে সামান্য কিছু ক্ষণ সময় কাটান অমিত শাহ। শাঁখ বাজিয়ে, উলু দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান এলাকার মহিলারা। অমিত প্রথমেই যান স্থানীয় বিজেপি সমর্থক অতনু মণ্ডলের বাড়িতে। অতনুর মা কল্পনা মণ্ডলের কাছ থেকে শরবত-রসগোল্লা-জলও খান তিনি। এর পর আরও এক সমর্থক সন্ধ্যা বৈদ্যর বাড়িতে গেলেও সেখানে বেশি ক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। তবে এরই ফাঁকে কয়েক জনের কাছ থেকে এলাকার শৌচাগার ও বিদ্যুতের সমস্যার কথা জানতে পেরেছেন।
আগামী সেপ্টেম্বরেই ফের এ রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ। বুথ স্তরে সংগঠনের জোর বাড়ানোর এই কর্মসূচি কতটা সফল হল তা জানতে পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।