অষ্টমীতে খিচুড়ি পরিবেশন করেছিলেন ডাক্তারবাবু

অষ্টমীর দিন পাড়ার দুর্গাপুজোয় নিজের হাতে খিচুড়ি পরিবেশন করেছিলেন ডাক্তারবাবু। সোমবার রাতে তাঁরই মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছল হাবড়ার মছলন্দপুরের নতুনপল্লিতে। মৃতের তালিকায় ওই চিকি‌ৎসক বিভাসকান্তি পাঠক ছাড়াও আছেন তাঁর বাবা, মা, জ্যাঠতুতো দিদি, মামা।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

হাবড়া শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৫
Share:

বিভাসকান্তি পাঠক

অষ্টমীর দিন পাড়ার দুর্গাপুজোয় নিজের হাতে খিচুড়ি পরিবেশন করেছিলেন ডাক্তারবাবু। সোমবার রাতে তাঁরই মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছল হাবড়ার মছলন্দপুরের নতুনপল্লিতে। মৃতের তালিকায় ওই চিকি‌ৎসক বিভাসকান্তি পাঠক ছাড়াও আছেন তাঁর বাবা, মা, জ্যাঠতুতো দিদি, মামা।

Advertisement

একাদশীর সন্ধ্যায় আত্মীয়-পরিজনদের নিয়ে সিকিমে রওনা দেন ডাক্তারবাবু। সোমবার এল ৫ জনের মৃত্যুর খবর। মঙ্গলবার

সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বিভাসের দোতলা বাড়ির সামনে বহু মানুষের ভিড়। অনেকেরই চোখে জল। কারও কারও বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি।নদিয়ার তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন বিভাস। চিকিৎসক হিসাবে তো বটেই, ভাল মানুষ হিসাবেও এলাকায় সুখ্যাতি ছিল তাঁর।

Advertisement

মামাতো ভাই সুরজ মণ্ডল একই বাড়িতে থাকেন। বললেন, ‘‘দাদা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হলেও এলাকায় রোগী দেখতেন। অনেকের থেকে টাকা নিতেন না। বরং বিনা পয়সায় ওষুধ দিতেন।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য দমদমে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন বিভাস। কিন্তু বেশির ভাগ সময় থাকতেন নতুনপল্লিতেই। স্থানীয় বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ রায়ের কথা, ‘‘ছোট থেকে চিনি বিভাসকে।

ডাক্তার বলে নিজেকে কখনও অন্যদের থেকে দূরে সরিয়ে নেয়নি। সকলের সঙ্গে সহজ ভাবেই মিশত।’’

বিভাসের বাবা ব্রজেন্দ্রনাথ স্বাস্থ্য দফতরে কর্মী ছিলেন। মা আশালতা ইছাপুরের একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা। বিভাসের পাশেই বাড়ি জ্যাঠতুতো দিদি লিলির। তিনি রাজারহাটের একটি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। মামা নীহারেন্দু থাকতেন বারাসতে।

ক’দিন পরেই ছিল ব্রজেন্দ্রনাথের পঁচাত্তরতম জন্মদিন। পাড়া-পড়শিদের অনেকে জানালেন, বাবার জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করবেন বলে ইচ্ছে ছিল ছেলের। অনেকের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনাও করেছিলেন ডাক্তারবাবু।

লিলির স্বামী তুষারকান্তিও দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন। বাড়িতে ছেলে, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ঋতম। সামনেই তাঁর পরীক্ষা। সে জন্যই বাবা-মায়ের সঙ্গে যেতে পারেননি। ঋতমের মা বলে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে সবাই মিলে পুরী বেড়াতে যাবেন। সে কথা বলতে বলতে কেঁদে চলেছেন ঋতম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন