ইঙ্গিত মিলেছিল গত বৃহস্পতিবারই যেদিন মদন মিত্রের হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করেন দুঁদে আইনজীবী কপিল সিব্বল। ভরা আদালতে তাঁর আইনজীবী সরাসরি বলেন, জামিন পেতে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে সাধারণের জীবন যাপন করতে এক কথায় রাজি তাঁর মক্কেল।
কারণ, একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী মদন মিত্রের নিজের প্রতাপই যে এখন তাঁর বিড়ম্বনার কারণ। অবস্থা এমনই যে, জামিন পেতে সাধারণের মতো জীবন যাপন করতেও এক কথায় রাজি তিনি। তার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে ‘রাজার হালে’ থাকার সুবিধাও এক কথায় ছাড়তে রাজি পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র।
নিম্ন আদালত অথবা কলকাতা হাইকোর্ট যেখানে যত বার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে, প্রত্যেক বারই তাঁর মতো প্রভাবশালী মন্ত্রী জামিন পেলে তদন্তে অসুবিধে হবে বলে অভিযোগ করেছে সিবিআই। জামিন পেতে মরিয়া মদন মিত্র কোনও কিছুরই কসুর করেননি। মোটা পারিশ্রমিকের বিনিময় দিল্লি থেকে উড়িয়ে এনেছিলেন নামজাদা আইনজীবী তথা প্রথমসারির কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলকেও। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। জামিন মেলেনি মন্ত্রীর। প্রভাবশালী তত্ত্বেই ফের আরও এক বার গত ৬ অগস্ট খারিজ হয় তাঁর জামিনের আবেদন।
সূত্রের খবর, জামিন খারিজ হওয়ার পর ব্যক্তিগত আইনজীবীদের শলা পরামর্শ করেন ‘মন্ত্রী মশাই’। তাঁদের পরামর্শে এ বার হাসপাতাল ছেড়ে আলিপুর জেলে ফেরারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তবে গ্রেফতার হলেও বেশির ভাগ সময় জেল নয় হাসপাতালেই কাটিয়েছেন মদনবাবু। গত ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৬ মাস তাঁর ঠিকানা এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের ভিভিআইপি রুম। এ বার দেখার, হাসপাতাল ছেড়ে জেলে গিয়ে জামিন মেলে কী না ‘প্রভাবশালী মন্ত্রী’ মদন মিত্রের?