এক বেঞ্চ থেকে মামলা গেল অন্য বেঞ্চে। সেই বেঞ্চও মামলা ফিরিয়ে দিল। একই দিনে কলকাতা হাইকোর্টের দু’টি পৃথক ডিভিশন বেঞ্চ মন্ত্রী মদন মিত্রের জামিনের আবেদন শুনতে না-চাওয়ায় মামলার শুনানি ফের পিছিয়ে গেল।
সোমবার হাইকোর্টে এই ঘটনার ফলে মদনবাবুর জামিন-আর্জির হাল একই রইল। মামলাটি শুনানির জন্য এ বার অন্য কোন ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হবে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি-ই তা ঠিক করবেন।
সারদা রিয়েলটি মামলায় অভিযুক্ত মদনবাবু গ্রেফতার হন ১২ ডিসেম্বর। আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একাধিক বার জামিনের আবেদন করা হয়। প্রতি বারই তা নামঞ্জুর হয়। পরে মদনবাবুর কৌঁসুলিরা যান আলিপুর জেলা জজ সমরেশপ্রসাদ চৌধুরীর এজলাসে। সেখানেও তা-ই।
মদনবাবু শেষমেশ হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। তাঁর জামিনের আবেদন জমা পড়ে বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানি যাতে দ্রুত হয়, মন্ত্রীর কৌঁসুলিরা সে ব্যাপারেও বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ঠিক হয়, সোমবার শুনানি হবে। সেই মতো এ দিন হাইকোর্ট বসতেই মদনবাবুর কৌঁসুলি শেখর বসু ও মিলন মুখোপাধ্যায় এবং সিবিআইয়ের কৌঁসুলি মহম্মদ আসরাফ আলি ডিভিশন বেঞ্চে উপস্থিত হন। কিন্তু বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ তাঁরা জানতে পারেন, মামলাটি পাঠানো হয়েছে বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। মদনবাবুর কৌঁসুলিরা তখন বিচারপতি রায়ের বেঞ্চে যান। হাইকোর্ট বার কাউন্সিলের সম্পাদক রানা মুখোপাধ্যায় মামলাটির শুনানির জন্য বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিচারপতি জানান, মামলার ফাইল তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। বলা হয়, দুপুর দু’টোয় শুনানি হবে।
কিন্তু শেষমেশ সেখানেও শুনানি হল না। কেন? বেলা দু’টোয় মামলাটি উঠলে বিচারপতি ঈশানচন্দ্র দাসকে পাশে বসিয়ে বিচারপতি অসীম রায় জানান, এই মামলা শুনতে তাঁদের এক জনের ব্যক্তিগত অসুবিধে রয়েছে। তাই তাঁরা মামলাটি ছেড়ে দিচ্ছেন। হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, বিচারপতি রায় ও বিচারপতি দাসের ডিভিশন বেঞ্চ মামলা ছেড়ে দেওয়ায় আবেদনটি যাবে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। তিনি ঠিক করবেন, কোন ডিভিশন বেঞ্চ এ বার মন্ত্রীর জামিনের আর্জি শুনবে।
এ দিকে সারদা রিয়েলটি মামলায় অভিযুক্ত সৃঞ্জয় বসুর জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই হাইকোর্টে মামলা করেছে। মঙ্গলবার বিচারপতি শিবসাধন সাধুর আদালতে শুনানি হওয়ার কথা। তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন সাংসদ সৃঞ্জয়বাবু সম্প্রতি আলিপুর জেলা জজের আদালতে জামিন পান। তাঁর পরে আর এক অভিযুক্ত, প্রাক্তন পুলিশকর্তা রজত মজুমদারও জামিন পেয়েছেন। রজতবাবুকে অবশ্য হাইকোর্টই জামিন দিয়েছে।