আলিপুর আদালতে মদন মিত্র। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
তদন্তকারী হিসেবে তারা অভিযুক্তের জামিনের বিরুদ্ধে সওয়াল করছে। অথচ তারাই মামলার কেস ডায়েরি পেশ করেনি!
এ হেন অনিয়মের সুবাদে সোমবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই (কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো)। যাঁকে ঘিরে মামলা, সারদা-কাণ্ডে ধৃত সেই প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রের জামিন-আর্জিও অবশ্য এ দিন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফের তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর কোর্ট।
সোমবার আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক সৌগত রায়চৌধুরীর এজলাসে মদনবাবুর জামিন-আবেদনের শুনানি ছিল। দুপুর আড়াইটে নাগাদ মদনবাবু আদালতে আসেন। তাঁর কৌঁসুলি বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও নীলাদ্রি ভট্টাচার্য বিচারকের কাছে অভিযোগ করেন, সিবিআই তাঁদের মক্কেলের জামিনের বিরোধিতায় সওয়াল করলেও মামলার কেস ডায়েরি কোর্টে জমা দেয়নি। কেন দেয়নি? সিবিআইয়ের কোঁসুলি পার্থসারথি দত্তের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিচারক। পার্থবাবু বলেন, তাঁদের তদন্তকারী অফিসার কলকাতায় না-থাকায় কেস ডায়েরি আনা যায়নি। শুনে জামিন-শুনানি মুলতুবি রেখে বিচারক সিবিআই’কে অবিলম্বে কেস ডায়েরি দাখিলের নির্দেশ দেন। ঘণ্টা দুয়েক বাদে সিবিআই কেস ডায়েরি জমা দিলে ফের শুনানি চালু হয়।
এবং তখনই সিবিআই’কে ভর্ৎসনা করে আদালত। ব্যুরোর কৌঁসুলিকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘‘এ বার থেকে কেস ডায়েরি নিয়েই কোর্টে আসতে হবে।’’ এ প্রসঙ্গে আদালতের কাছে মদনবাবুর আর এক কৌঁসুলি পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়ের নালিশ— ‘‘আমার মক্কেলের শরীর অত্যন্ত খারাপ। শ্বাসকষ্ট রয়েছে। দিনে দু’বার অক্সিজেন নিতে হচ্ছে। অথচ সিবিআই খামখেয়ালি আচরণ করে চলেছে!’’
এ দিকে কোর্ট চত্বর ছাড়ার সময় এ দিন সাংবাদিকদের সামনে রাজ্যের নতুন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসা করেছেন মদনবাবু। কলকাতা পুলিশের জারি করা ‘হেলমেট নেই, পেট্রোল নেই’ ফরমানকে স্বাগত জানিয়ে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী বলেন, প্রগ্রেসিভ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন (যে সংগঠনের নেতা মদনবাবুই) কলকাতা ও কামারহাটিতে এক হাজার জনকে নিখরচায় হেলমেট দেবে। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ‘আগে এলে আগে সুযোগ’— এর ভিত্তিতে হেলমেট মিলবে। ‘‘কারা হেলমেট পরছে, কারা পরছে না, আমাদের অ্যাসোসিয়েশন সে দিকে নজর রাখবে।’’— মন্তব্য মদনবাবুর। প্রাক্তন মন্ত্রীর এ-ও ঘোষণা, তাঁদের ট্যাক্সি সংগঠনে এ বার এমবিএ, বিটেক ডিগ্রিধারী ও তথ্যপ্রযুক্তির কাজ জানা পেশাদার যুবক-যুবতীদের কর্মী হিসেবে নিযুক্ত করা হবে। কেন?
মদনবাবুর ব্যাখ্যা: ওলা-উবেরের মতো সংস্থার সঙ্গে টক্করে হলুদ ট্যাক্সিকে যদি টিকে থাকতে হয়, তা হলে উপযুক্ত প্রযুক্তির ঠিকঠাক ব্যবহার জরুরি। সেই লক্ষ্যেই নতুন এই পরিকল্পনা।