পরীক্ষা শুরু হতে না হতেই হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরছিল এই প্রশ্নপত্র।
গ্রেফতারের পরেও মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র পাচার আটকনো গেল না। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই অঙ্কের প্রশ্নপত্রও ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে।
সোমবার সকালে রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে সিআইডি-র জালে পাঁচ অভিযুক্ত ধরা পড়ার পর সাময়িক স্বস্তি মিললেও, অঙ্কের প্রশ্ন পাচারের পর নতুন করে কপালে ভাঁজ পড়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। শিক্ষামহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তাহলে কি এ বছর আটকানো যাবে না প্রশ্ন পাচার? এবার তো ‘ডাবল হ্যাট্রিকের’ দিকে এগোচ্ছে প্রশ্নপাচারের ঘটনা!
এ দিন বেলা ১২টার পর পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে পাচার হয়ে যায় অঙ্কের প্রশ্নপত্র। পরবর্তী ক্ষেত্রে দেখা যায়, তার সঙ্গে পরীক্ষা হলে দেওয়া অঙ্কের প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল রয়েছে। বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোলের প্রশ্ন আগে পাচার হয়েছিল। এ দিন সকালে গ্রেফতারের পর মনে করা হচ্ছিল, প্রশ্ন পাচার আটকানো যাবে। কিন্তু, বাস্তবে তা হয়নি।
তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এ বিষয়ে সিআইডি কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও, একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, পরীক্ষা হলে প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর, তা মোবাইলে ছবি তুলে হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে চলে যাচ্ছে। আবার কিছুক্ষণের মধ্যে সেই প্রশ্নের উত্তর চলে আসছে ওই গ্রুপে। ফলে যারা এই প্রশ্নপত্র পাচার করছে, তারা ওই হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে উত্তরও পেয়ে যাচ্ছে।
এই চক্র ছড়িয়ে রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। এ বছর কড়া নজরদারি থাকা সত্ত্বেও, কী ভাবে পরীক্ষা কেন্দ্র মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার্থীরা ঢুকে পড়ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই স্কুলগুলিতে যাঁরা পর্ষদ নিযুক্ত নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরা কোনও ভাবে জড়িত কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে। এছাড়া, ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা তদন্তের আওতায় পড়বে বলে সিআইডি সূত্রে খবর।
প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে রাজ্য সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছে বিরোধীরা। সোমবারই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতিবারই প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। সরকার কিছুই করতে পারছে না। শিক্ষামন্ত্রীও নিশ্চুপ।’’ অন্য দিকে এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ছাত্র পরিষদ। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ধিক্কার জানিয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-ও।