Madhyamik Exam 2020

ইন্টারনেট বন্ধ, তবু বেরিয়েই গেল প্রশ্ন

গত বছর শুধু শেষ দিনের পরীক্ষা ছাড়া প্রতিটি পরীক্ষার প্রশ্নের একাংশ হোয়াটসঅ্যাপে বেরিয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১৬
Share:

মঙ্গলবার বেলা দেড়টা নাগাদ হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে এই প্রশ্ন। তারই স্ক্রিনশটের অংশ।

সুরক্ষা নিশ্ছিদ্র করতে মোবাইল নিষিদ্ধ, ৪৩টি ব্লকে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়া আটকাতে পারল না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মঙ্গলবার মাধ্যমিকের প্রথম দিনে বাংলা পরীক্ষা চলাকালীন হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্রের দু’টি পাতা বেরিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বাগডোগরা পরীক্ষা কেন্দ্রের শুভমায়া এসএন হাইস্কুলে বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ দিনের পরীক্ষা বাতিল হয় ১৮ জনের।

Advertisement

গত বছর শুধু শেষ দিনের পরীক্ষা ছাড়া প্রতিটি পরীক্ষার প্রশ্নের একাংশ হোয়াটসঅ্যাপে বেরিয়ে গিয়েছিল। শেষ দিনের পরীক্ষার আগে কিছু জেলায় ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়। এ বার যাতে প্রশ্ন না-বেরোয়, সেই জন্য প্রথম দিন থেকেই মুর্শিদাবাদ, মালদহ, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, বীরভূমের মতো কিছু জেলার ৪৩টি ব্লকে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, শুধু পরীক্ষার্থী নয়, শিক্ষকদেরও মোবাইল ও স্মার্ট ঘড়ি নিয়ে পরীক্ষা হলে ঢোকা নিষিদ্ধ।

এত পদক্ষেপের পরেও প্রশ্ন বেরোনো ঠেকানো যায়নি। অভিযোগ, বাংলা পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টার কিছু পরে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নের চার ও পাঁচ নম্বর পাতা বেরিয়ে যায়। কলকাতা-সহ কিছু জেলায় পাতা দু’টি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরীক্ষার শেষে সেগুলির সঙ্গে মূল প্রশ্নের চার ও পাঁচ নম্বর পাতা মিলিয়ে দেখা যায়, হুবহু মিল! কোথাও কোথাও অভিযোগ ওঠে, বাংলার পুরো প্রশ্নপত্রই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়া দু’টি পাতার মধ্যে একটির পিছনে ‘লুজ় শিট’ লেখা একটি পাতা দেখা গিয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের বেঞ্চে পরীক্ষার্থীদের নাম, রোল নম্বর-সহ যে-কাগজ সাঁটা থাকে, তার কিছুটা অংশ দেখা গিয়েছে অন্য পাতার পাশে। শিক্ষা শিবিরের কেউ কেউ মনে করছেন, কোনও পরীক্ষা কেন্দ্রের কোনও বেঞ্চে দু’টি পাতা রেখে ছবি তোলা হয়েছে। শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশ লুজ় শিটের নম্বর দেখে দোষীকে খুঁজে বার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছে। প্রশ্ন বেরোনোর বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি পর্ষদ-প্রধান। তিনি ফোনে শুধু বলেন, ‘‘একদম মেলেনি। আপনারা যখন মিলিয়েছেন, তখন বিবৃতিটা আপনারা দেবেন। আমার কাছে আসেনি। এলে আমি মিলিয়ে দেখব। তার পরে কথা বলব।’’

বিকেলে পর্ষদের অফিসে গেলে কল্যাণময়বাবু দেখাই করেননি।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারের বদনাম করতে এ-সব করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানতে পারব, কোথা থেকে এ-সব হচ্ছে।’’

পরে পর্ষদ থেকে জানানো হয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের খাজরা এমসিএম হাইস্কুলের পরীক্ষার্থী সুমন পারিয়ার মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। উত্তরপত্র-সহ সিল করে পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে। জাল অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে পরীক্ষায় বসার অভিযোগে এক পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের কাজোড়া হাইস্কুলে। মালদহে রতুয়ার কিছু স্কুলে ‘টুকলি’ সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। কোথাও কোথাও কার্নিস বেয়ে উঠে চিরকুট জোগান দিতে দেখা গিয়েছে। তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন