জলপাইগুড়িতে নগর বেরুবাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির পুজো। —নিজস্ব চিত্র।
হাটের মাঠে হয় দশমীর মেলা, মহরমের লাঠিখেলাও। এ বারে হাটবারে দশমী পড়েছে। পরের দিন মহরম। তাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল মেলা। এই অবস্থায় মহরমের লাঠিখেলা এক দিন পিছিয়েই দিলেন মহরম কমিটির সদস্যেরা।
সম্প্রীতির বার্তা দিতে এই সিদ্ধান্তে গর্বিত জলপাইগুড়ি। জেলার নগর বেরুবাড়ি হাটের মাঠে প্রতি বছর দুর্গাপুজো হয়। মহরমের লাঠিখেলাও হয় সেই মাঠেই৷ দশমীতে সেখানে মেলারও আয়োজন করেন পুজো উদ্যোক্তারা৷ প্রায় ৬০ বছর ধরে সেখানে পুজো করছে নগর বেরুবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি৷ তার অন্যতম কর্তা বিশাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘এ বার শনিবার বিজয়া দশমী পড়ে গিয়েছে৷ শনিবারই আবার হাটের মাঠে হাট বসে৷ তাই এ দিন মেলা করা সম্ভব হয়নি৷ রবিবার মহরমের লাঠি খেলা হবে বলে মেলাটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল৷ কিন্তু মহরম কমিটির সঙ্গে আলোচনা শুরু হতেই তাঁরা মেলার জন্য লাঠিখেলা একদিন পিছিয়ে দিতে রাজি হয়ে যান৷’’ ঠিক হয়েছে, রবিবার দশমীর মেলা ও প্রতিমা নিরঞ্জন হবে৷ লাঠিখেলা হবে সোমবার৷
বিসর্জন ও মহরমকে ঘিরে এর আগেও সম্প্রীতির ছবি দেখা গিয়েছে জলপাইগুড়িতে৷ পিলখানা মাঠেও দুর্গাপুজো ও মহরমের লাঠি খেলা— দু’টিই হয়। প্রতি বছর দুর্গাপুজো কমিটি মহরমের লাঠিখেলায় সেরাদের পুরস্কৃতও করে৷ এ বার সেই পুরস্কারের মান আরও ভাল করতে পুজোর বাজেট পর্যন্ত কাটছাঁট করেছেন উদ্যোক্তারা৷
আরও পড়ুন: কোর্টে মুক্ত পদত্যাগী মন্ত্রী, স্বস্তি সিপিএমের
সম্প্রীতি, সৌভ্রাতৃত্বের সুরেই বেরুবাড়ি বাজার মহরম কমিটির সম্পাদক নুর ইসলাম জানান, দশমীর মেলা যেমন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এক সঙ্গে উপভোগ করেন, তেমনই মহরমের লাঠি খেলা দেখতেও দুই সম্প্রদায়ের মানুষ ভিড় জমান৷ তাঁর কথায়, ‘‘হাটবার পড়ে যাওয়ার জন্য তাই মেলা ও মহরম একদিন পিছিয়ে করার ব্যাপারে এলাকার দুই সম্প্রদায়ের মানুষের স্বাক্ষর করা একটি আবেদনপত্র পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের কাছে জমা দিই৷ তাতে পুলিশ কর্তারাও রাজি হন৷’’
জলপাইগুড়ির এসপি অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘বেরুবাড়িতে দুর্গাপুজো ও মহরম, দুই কমিটিতেই উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। তাঁরা আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে এসেছেন৷ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছি৷’’