TMC

খুন-সহ ১৮ মামলায় অভিযুক্ত ইয়াসিনের ঠাঁই তৃণমূলের জেলা কমিটিতে

কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটে হুগলির এক দুষ্কৃতীর মৃত্যুর ঘটনায় দলের অন্দরেই ইয়াসিনকে নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৫৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

‘‘কে এই ইয়াসিন?’’— এই প্রশ্ন প্রকাশ্য সভায় করেছিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইয়াসিনের উপরে মালদহের নেতৃত্বকে রাশ টানারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তার পরেও এ বারের তৃণমূলের মালদহ জেলা কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন খুন, জমি দখল, বেআইনি ভাবে অস্ত্র মজুতের মতো ১৮টি মামলায় অভিযুক্ত রতুয়ার ইয়াসিন শেখ।

Advertisement

কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটে হুগলির এক দুষ্কৃতীর মৃত্যুর ঘটনায় দলের অন্দরেই ইয়াসিনকে নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে মালদহের তৃণমূল শিবির।

রতুয়ার বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন। পালাবদলের আগে তিনি ছিলেন বামেদের ছত্রছায়ায়। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়াই করে জয়ী হন ইয়াসিন। বোর্ড গঠনে তৃণমূলকে সমর্থনের পরে পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন তিনি। এর পরেই যোগ দেন তৃণমূলে। অভিযোগ, রতুয়ার দলীয় কর্মসূচিতে তৃণমূলের এক নেত্রীকে মারধরের ঘটনায় নাম জড়ায় তাঁর। হরিশ্চন্দ্রপুরে এক বৃদ্ধা খুনেও অভিযুক্ত ছিলেন। দু’টি ঘটনাতেই বিচারাধীন হিসেবে বছরখানেক জেলে ছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে রতুয়ার জেলা পরিষদের আসনে স্ত্রী পায়েল খাতুন তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। সেই সময় ইয়াসিনের বিরুদ্ধে ব্যালট বাক্স লুটের অভিযোগ উঠেছিল। গত লোকসভাতেও সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। নির্বাচন কমিশন তাঁকে নজরবন্দিও করেছিল। তাঁর স্ত্রী মালদহ জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৬ সাল থেকে ইয়াসিনের বিরুদ্ধে মোট ১৮টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি, তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলের নতুন দু’টি মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “জমি দখলের মামলা ছাড়া বাকিগুলি আদালতে বিচারাধীন।”

Advertisement

এ বারে মালদহ সফরে ইয়াসিনের উপরে রাশ টানার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। যদিও ইয়াসিন দলে স্বমহিমায় রয়েছেন বলে অভিযোগ দলীয় নেতৃত্বের একাংশের। এ বার তৃণমূলের জেলা কমিটিতে সম্পাদক করা হয়েছে ইয়াসিনকে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৎকালীন জেলা যুব নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ইয়াসিনের। সেই সূত্রেই রাজ্যের তৎকালীন প্রভাবশালী এক নেতার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তার পরেই দলে সক্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী কর্মাধ্যক্ষ হলেও সরকারি গাড়িতে তিনিই ঘুরে বেড়ান। এমনকি, তাঁর স্ত্রীর দফতরেও দলবল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।

ইয়াসিন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। আদালতে সেগুলি বিচারাধীন।” তৃণমূল জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, “কলকাতার ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন