মোদী মিথ্যাবাদী চৌকিদার, আমি মানুষের পাহারাদার: মমতা

বুধবার রামপুরহাটে প্রশাসনিক সভায় বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আগাগোড়া আক্রমণাত্মক। মোদী-শাহ থেকে শুরু করে বিজেপিকে ‘চোর-ডাকাত-গুন্ডা-মিথ্যেবাদী’ সবই বলেছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘মিথ্যাবাদী চৌকিদার’ এবং নিজেকে ‘জনগণের পাহারাদার’ বলে তুলনা টানলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই বিজেপিকে চিহ্নিত করলেন ‘চোর-ডাকাত’এর দল বলে। মমতার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এই রাজ্যে সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা করছে। মানুষকে ভাঁওতা দিচ্ছে।’’

Advertisement

বুধবার রামপুরহাটে প্রশাসনিক সভায় বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আগাগোড়া আক্রমণাত্মক। মোদী-শাহ থেকে শুরু করে বিজেপিকে ‘চোর-ডাকাত-গুন্ডা-মিথ্যেবাদী’ সবই বলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, ‘‘তোমরা চোর-ডাকাতের দল। তোমার মতো মিথ্যে কথা বলা চৌকিদার আমি নই। ১৫ লক্ষ টাকা করে ব্যাঙ্কে দিয়ে দেব বলি না। জনগণের টাকা লুঠ করি না।’’ এর পরেই জনগণের উদ্দেশে মমতার সতর্কবাণী, ‘‘আমি মানুষের পাহারাদার। আমি আছি বলে এ রাজ্যে কোনও আঁচ পান না আপনারা। দেশে কী হচ্ছে রাজ্যের মানুষকে বুঝতে দিই না। আগলে রাখি।’’

রাজ্যের প্রকল্প বনাম কেন্দ্রের প্রকল্প নিয়ে চাপানউতোরেও এ দিন মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক দিন আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ রাজ্যে এসে পকেট থেকে তালিকা বার করে দাবি করেছিলেন কেন্দ্রের শতাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প এখানে রাজ্য সরকার নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছে, অথবা করতে দিচ্ছে না।

Advertisement

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী রামপুরহাটে প্রশাসনিক সভায় দাঁড়িয়ে বিজেপির ওই দাবি কার্যত তুলোধোনা করে প্রকল্পের নাম ধরে ধরে জানিয়ে দেন, কেন্দ্র তাদের প্রকল্প করার বহু আগে থেকেই রাজ্য প্রকল্পগুলি শুরু করে দিয়েছে। প্রবল আর্থিক চাপ, কেন্দ্রের দেনা ইত্যাদি শোধ করতে হলেও প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়নি, বরং নতুন নতুন সংযোজন হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিল্লির কিছু অর্ধশিক্ষিত, গর্দ-শিক্ষিত নেতা বলছেন, কন্যাশ্রী নাকি আমরা অনুকরণ করেছি। আমি চ্যালেঞ্জ করছি। কন্যাশ্রী ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল। বেটি বাঁচাও শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। আপনারা আমাদের টুকলি করেছেন। নির্মল বাংলা কবে শুরু হয়েছে? আর নাচ গান করে স্বচ্ছ ভারত বলে কবে রাস্তায় নেমেছেন? ন্যাকামো যত!’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, সারা দেশে বেটি বাঁচাওয়ের বাজেট ১০০ কোটি টাকা। সেখানে শুধু কন্যাশ্রীর জন্য রাজ্যের ইতিমধ্যেই খরচ হয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকা।

তাঁর আরও দাবি, এখানে কৃষক বীমার টাকা কেন্দ্র দেয় না, রাজ্যই দেয়। তিনি বলেন, ‘‘ওরা পোস্ট অফিসকে ব্যবহার করছে। দালালি করে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়া কার্ড পাঠাচ্ছে। এ সব প্রকল্পে আমরা ৮০ টাকা দিই। ওরা ২০ টাকা দেয়। চ্যালেঞ্জ করলাম। ভুল বললে গরদান কেটে নেবেন।’’

রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করে মঙ্গলবার শাহ ঘোষণা করেছিলেন, মে মাসের শেষে ভোট গণনার দিন, বেলা দু’টো নাগাদ এ রাজ্যে তৃণমূল সরকারের পতন হবে। এ দিন তার প্রতিক্রিয়ায় মমতার কটাক্ষ, ‘‘কয়েকটা গদ্দার, গুন্ডা এসে বলে দিচ্ছেন, নির্বাচনের ফল কবে বেরবে। কটার সময় বেরবে। নির্বাচন কমিশনটাও ওঁদের হয়ে গিয়েছে নাকি? আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে এই প্রশ্ন নিয়ে যাব!’’ এর পরই তাঁর হুঙ্কার, ‘‘এ রাজ্যে ৪২টা আসনেই তোমরা হারবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন