ডুবিয়ে দেয় ডিভিসি, কেন্দ্রকে তোপ মমতার

জল ছাড়া নিয়ে তরজাটা পুরনো। রাজ্য বনাম দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। তবু ফি বছরই তা নতুন নতুন পথে মাথাচাড়া দেয়। এ বার যেমন তরজা শুরু হল ‘বিদেশি’ নিম্নচাপের হামলা নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৪
Share:

জল ছাড়া নিয়ে তরজাটা পুরনো। রাজ্য বনাম দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। তবু ফি বছরই তা নতুন নতুন পথে মাথাচাড়া দেয়। এ বার যেমন তরজা শুরু হল ‘বিদেশি’ নিম্নচাপের হামলা নিয়ে।

Advertisement

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, মায়ানমারে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ধেয়ে আসছে দক্ষিণবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের দিকে। ফলে আজ, রবিবার ও কাল, সোমবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে জলাধার থেকে জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসিকে তোপ দেগেছে রাজ্য সরকার।

সেচ দফতর সূত্রের খবর, এখন ভরা কোটাল চলছে। ফলে হুগলি পর্যন্ত নদীগুলিতে জলস্তর বেশি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিভিসি অতিরিক্ত জল ছাড়লে তা নীচের দিকে নামতে পারবে না। ফলে দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলায় বন্যা হতে পারে। রাজ্য সরকারের মতে, ডিভিসি জলাধারগুলির পলি না তোলায় তাদের ধারণক্ষমতা কমেছে। তার ফলে বেশি বৃষ্টি হলেই ডিভিসি জল ছাড়ে। তাতে বানভাসি হয় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। এ নিয়ে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এ নিয়ে কেন্দ্রকে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু জল ছেড়ে বাংলাকে ডুবিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছু করে না।’’

Advertisement

ডিভিসির কর্তারা অবশ্য বলছেন, জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত তাঁরা একা নেন না। কেন্দ্রীয় জল কমিশন, রাজ্য সরকার ও ডিভিসির প্রতিনিধিদের নিয়ে যে কমিটি রয়েছে, তার সুপারিশ মেনেই জল ছাড়া হয়। রাজ্য প্রশাসনকেও জানানো হয়। ডিভিসি সূত্রের দাবি, ভারী বা অতি ভারী বৃষ্টি হলে যাতে জলাধারে বেশি জল ধরে রাখা যায় তার প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে। কী সেই প্রস্তুতি?

ডিভিসি সূত্রের খবর, গত তিন দিন ধরে ধাপে ধাপে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়েছে। শনিবার দুপুরেও ওই দুই জলাধার থেকে ৫০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে তারা। এই জল ছাড়ার পরিমাণ স্বাভাবিক বলেই তাদের দাবি। তবে পলি তোলা নিয়ে রাজ্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে সরাসরি মন্তব্য করেনি ডিভিসি। তাদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পলি জমায় কিছু জলাধারের ধারণক্ষমতা সত্যিই কমেছে। তবে জলাধার থেকে পলি তোলার অনুকূল পরিস্থিতিও তারা পায়নি। সূত্রটির বক্তব্য, মাইথন ও পাঞ্চেতে যা জলস্তর রয়েছে, তাতে অস্বাভাবিক বৃষ্টি না হলে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি না-ও হতে পারে। তবে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হলে জল ছাড়তেই হবে। না হলে জলাধার ভেঙে গিয়ে আরও বড় বিপর্যয় আসতে পারে।

পরিস্থিতির গুরুত্ব আঁচ করে এ দিন থেকেই সেচ দফতর জোর কদমে কাজে নেমে পড়েছে। বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায় পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারদের মোতায়েন করা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে জেলা প্রশাসনকেও। সেচ দফতর সূত্রের খবর, এ দিন বিভিন্ন নদী বাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রয়োজন মতো বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ উঁচুও করা হয়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement