mamata banerjee

বহিরাগত বিতর্কে আশ্বাস শিল্পকেও

মঙ্গল ও বুধবার নবান্নে শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সূত্রের খবর, সেখানে শিল্প কর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।

বাংলায় কথা না-বললেই কেউ ‘বহিরাগত’ নন। বুধবার নবান্নের সভাঘরে শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার পশ্চিমবঙ্গ সফরের পর থেকে পারদ চড়ছিল এই ‘বহিরাগত বিতর্কের’। অনেকের মতে, নিশানার অভিমুখ বিজেপি হলেও, আহত বোধ করছিলেন রাজ্যের ভিন্ ভাষার মানুষের একাংশ। ভুল বার্তা যাচ্ছিল অন্য রাজ্যে শিকড় থাকা শিল্পপতিদের মধ্যে। এ দিন সম্ভবত দুই ক্ষেত্রেই জল ঢালার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

মঙ্গল ও বুধবার নবান্নে শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সূত্রের খবর, সেখানে শিল্প কর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবাসীরা সকলেই বাঙালি। কেউ বহিরাগত নন। বাংলা না-বললেও তাঁকে বহিরাগত বলে মনে করেন না কেউ। অন্য ভাষারও কেউ রাজ্যে থাকলে, তিনি বাংলার আপন।

অনেকের মতে, ভোটের মুখে শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের সামনে বাংলা বলা-না-বলার ফারাক না-রাখার এই বার্তা ইঙ্গিতবহ। তাঁদের ধারণা, নড্ডার সফরের পর থেকে ‘বহিরাগত-বিতর্ক’ ক্রমশ যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, সে সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বোঝাতে চেয়েছেন, বাইরে থেকে এসে যাঁরা রাজ্যের ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে আঘাত করছেন, ‘বহিরাগত’ তকমা তাঁদের জন্যই।

Advertisement

ভিন্ রাজ্য থেকে বাংলায় এসে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ অতীতে বহু বার তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও একাধিক বার তা বলেছেন। কিন্তু নড্ডা-কাণ্ডের পরে এই বিতর্কই ভিন্ন মাত্রা পায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের প্রতিক্রিয়ায়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি পাল্টা বলেছিলেন, ভারতের মধ্যে কেউ বহিরাগত নন। আবেদন জানিয়েছিলেন এ ধরনের শব্দবন্ধ ব্যবহারে বিরত থাকার জন্যও। এই প্রেক্ষিতে শিল্পমহলের সামনে মমতার বার্তা তাই তাৎপর্যপূর্ণ।

প্রশাসনিক মহলেরও দাবি, রাজ্য কখনও বাংলা বলা-না-বলার ভিত্তিতে বঙ্গবাসীর মধ্যে ভেদাভেদ করেনি। দুর্গাপুজো, ইদ বা বড়দিনের উৎসবে যতটা গুরুত্ব সরকার দেয়, অবঙ্গভাষী মানুষের উৎসব আয়োজনেও ততটা গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নেয় প্রশাসন। মনে করা হচ্ছে, সম্মেলনে এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

দু’দিনের বৈঠক শেষে সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রে খবর, আগামী দিনে শিল্পায়নের বিপুল সম্ভাবনা দেখছে রাজ্য। অশোকনগরে তেল মেলার পরে বিপুল বিনিয়োগ হবে। গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির পাশাপাশি ডেউচা-পাঁচামির মতো বৃহৎ কয়লা খনির বরাত রাজ্য পাওয়ায় অনুসারি শিল্পেও জোয়ার আসার সম্ভাবনা। আশা, তার হাত ধরে আর্থিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং কাজের নতুন সুযোগ তৈরিরও। এই বিষয়গুলিও শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেকের সহযোগিতা চেয়েছেন। বোঝার চেষ্টা করেছেন, কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। শিল্পমহলকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন