—ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন ছিল মন্ত্রীর উদ্দেশে। উত্তর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, প্রশ্নকর্তা দলীয় বিধায়কদের ভেবেচিন্তে প্রশ্ন করার নির্দেশও দিলেন তিনি। কতকটা নজিরবিহীন ভাবে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সরব উপস্থিতি দেখে নিজেদের কার্যত গুটিয়ে রাখলেন শাসক দলের বিধায়কেরা।
মঙ্গলবার বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে আবাসন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া তথ্য প্রকাশ্যেই মানতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সভার শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্বে ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের উদ্দেশে বলেন, ইলিশের জন্য ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় রাস্তা আটকে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে প্রবল যানজট। তাই মন্ত্রীর কাছে একটি বিকল্প রাস্তার দাবি জানান বিধায়ক। চন্দ্রনাথবাবু জানান, রাস্তা তাঁর দফতরের বিষয় নয়।
এর পরেই উত্তরের নিয়ন্ত্রণ নেন মুখ্যমন্ত্রী। চন্দ্রনাথবাবুর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অন্য দফতরের ব্যাপারে মৎস্যমন্ত্রীর ঢুকে পড়া উচিত নয়। প্রশ্নকর্তা বিধায়ককে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শও দেন মমতা। একই সঙ্গে সকলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘মাছ না-খেলে জীবন সম্পূর্ণ হয় না।’’ মাছ উৎপাদনে রাজ্য কী কী পদক্ষেপ করছে, সেই তথ্যও সভায় তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
অতিরিক্ত প্রশ্নে শাসক দলের অন্য এক বিধায়ক মৎস্যমন্ত্রীকে জানান, নৈহাটি এলাকার একটি বাজারে কিছু সমস্যা হচ্ছে। মৎস্যমন্ত্রী উত্তর দিতে গেলে তাঁকে এ বার বসিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেই প্রশ্নকর্তার উদ্দেশে জানান, বাজারটি কার অধীনে, সেটা দেখতে হবে। বিধায়কের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, এই সব ব্যাপারে মৎস্যমন্ত্রীর কী করণীয়? রাস্তাঘাটও কী মৎস্যমন্ত্রী করবেন? এই সব বিষয় জেনে বিধায়কের প্রশ্ন করা উচিত বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পরামর্শ, পঞ্চায়েত-পুরসভার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে হবে। উদ্যোগী হতে হবে নিজেকেও।
কারিগরি মন্ত্রী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশে আইআইটি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন শাসক দলের এক বিধায়ক। রাজ্যে এই ধরনের ক’টি প্রতিষ্ঠান চলছে, কী ভাবে চলছে, নতুন ক’টি আইআইটি তৈরি হয়েছে, সেই তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী। তাঁর উদ্দেশে অতিরিক্ত প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, উৎকর্ষ বাংলা তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছর ছ’লক্ষ ছেলেমেয়ের কারিগরি প্রশিক্ষণ হচ্ছে। এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ তথা শিল্পমন্ত্রী বিধানসভায় জানান, বিভিন্ন বণিকসভা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রশিক্ষণ এবং নিয়োগের ব্যবস্থা করবে। সরকারের লক্ষ্য, এক-এক জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোগপতি তৈরি করা। যাতে তিনি আরও ১৫ জনের কর্মসংস্থান করতে পারেন। শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টই বলছে, এ রাজ্যে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে।