মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নানা দিক দিয়েই ব্যাঙ্কিং শিল্পের এখন কঠিন সময়। এমন এক সময়ে মুম্বইয়ে এসে দেশের প্রথম সারির ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও এক বার বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাঙ্কের আরও শাখা খোলা থেকে শুরু করে গ্রামীণ-সামাজিক ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া এবং বেসরকারি প্রকল্পে টাকা ঢালার আর্জি জানালেন তিনি।
এ দিন আলোচনায় যাঁরা হাজির ছিলেন, তাঁদের মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার, কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর উদয় কোটাক, সিটি ব্যাঙ্কের সিইও প্রমিত জাভেরি, এডেলওসিস-এর চেয়ারম্যান রাশেষ শাহ, আরবিএল ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান বিশ্ববীর আহুজা অন্যতম। এ ছাড়াও আদি গোদরেজ, সজ্জন জিন্দল, নিরঞ্জন হীরানন্দানির মতো শিল্পপতিরাও ছিলেন। যাঁদের বাংলায় বিনিয়োগ রয়েছে।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কঠিন পরিস্থিতিকে সুযোগে পরিণত করে বাংলায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান। যা অত্যন্ত ইতিবাচক, বলছেন উপস্থিত শিল্পপতিরা। তবে বৈঠকে বাংলামুখী কোনও নতুন প্রস্তাব আসেনি বলেই তাঁদের কেউ কেউ জানান। যদিও রাজ্যের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, লগ্নি এক দিনে আসে না। জানুয়ারির শিল্প সম্মেলনের সলতে পাকানোর কাজ চলছে এখন। কলকাতা গিয়ে নতুন শিল্প প্রস্তাব ঘোষণা করবে সংস্থাগুলি।
কেমন হল আলোচনা? এইচ-এনার্জি গোষ্ঠীর প্রধান নিরঞ্জন হীরানন্দানির কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিক। তিনি চাইছেন আরও শিল্প যাতে সে রাজ্যে যায়।’’ প্রমিত জাভেরি বলেন ‘‘নির্দিষ্ট প্রস্তাবের কথা শুনলাম না। তবে মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন আমাদের উপস্থিতি বাড়ুক।’’
এ দিন দেড়শোর বেশি কর্পোরেট সংস্থার পরিচালকদের (সিইও) সঙ্গেও ঘরোয়া বৈঠকও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, ‘‘বাংলা এখন বদলে গিয়েছে। বাংলায় আসুন, দেখুন। তার পর সিদ্ধান্ত নিন। আমি মিথ্যা কথা বলে ভুল তথ্য দিয়ে মন জয়ের চেষ্টা করি না।’’ সরকারের দাবি, বুধবারের বৈঠকে যে সব সংস্থা এসেছিল, তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ লক্ষ কোটির বেশি। এদের একাংশও যদি লগ্নি করতে এগিয়ে আসে, তা হলে তা রাজ্যের বিনিয়োগ মানচিত্র বদলাতে সাহায্য করবে। জানুয়ারিতে কলকাতায় হতে চলা গ্লোবাল বিজনেস ইনভেস্টমেন্ট সামিটেও ওয়াইপিও-র প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনই একই হোটেলে বসেছে এক বণিকসভার উত্তর ভারতে লগ্নির সম্মেলন। সেখানে একসঙ্গে হাজির পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্পসচিব রমেশ অভিষেক। সেখানে বহুজাতিক সংস্থা ওয়ালমার্টের কাছ থেকে নিজের রাজ্যে লগ্নির ব্যাপারে আশ্বাস আদায় করেছেন অমরিন্দর।
মমতা অবশ্য একাই চলার পক্ষে। বৈঠক শেষে তাঁর দুই মন্ত্রী অমিত মিত্র ও ইন্দ্রনীল সেন গাইলেনও ‘যদি তোর ডার শুনে কেউ না আসে...’।