মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
আগামী বছরের গোড়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সভা ‘বিশ্ব ইজতেমা সমাবেশ’ আয়োজনে রাজ্য সরকার যে পাশে রয়েছে, সোমবার ইমামদের সঙ্গে বৈঠকে সে আশ্বাস স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন নবান্নে রাজ্যের ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ২ থেকে ৫ জানুয়ারি হুগলির পুইনানে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করবে রাজ্য প্রশাসন। বৈঠকে উপস্থিত প্রশাসনিক কর্তা ও মন্ত্রীদের সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, সামনেই নির্বাচন। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা আবশ্যক। প্রসঙ্গত, যুবভারতীর মেসি-কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা।
এ দিনের বৈঠক ঘিরে অবশ্য জল্পনা ছিল ইমাম ভাতা বৃদ্ধি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওয়াকফ-ক্ষোভ কিংবা অতিসম্প্রতি তৃণমূলের নিলম্বিত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে ঘিরে যে বিতর্কের আবহ তৈরি হয়েছে তা নিয়ে কোনও কথা উঠবে কি না? নবান্ন সূত্রের খবর, বিষয়গুলি এ দিন কার্যত ‘সযত্নে’ এড়িয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, রাজ্যে ক্ষমতা দখলের বছর ঘোরার আগেই ইমাম ভাতা চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১২ সাল থেকে ইমামদের মাসিক অনুদান বরাদ্দ হয়েছিল ২৫০০ টাকা। ২০২৩-এর অগস্ট মাসে সেই অনুদানের অঙ্ক এক লপ্তে আরও ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। নির্বাচনের মাস কয়েক দূরে দাঁড়িয়ে, রাজ্য সরকার ফের এক দফা ইমাম ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কি না, তা নিয়ে নানা মহলে চর্চা চলছিল। এ দিন বৈঠকের পরে সে ব্যাপারে কোনও সরকারি ঘোষণা হয়নি। তবে ইমাম সংগঠনের কর্তারা দাবি করেছেন, বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন।
যদিও এ দিন বৈঠকের আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘ইমামদের বলব, মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করুন যে, কেন আপনাদের ধর্মস্থান তৈরি করতে গিয়ে তৃণমূলের এক জন বিধায়ক সাসপেন্ড হলেন? ওয়াকফ সংশোধনী বিল, ওবিসি আইন নিয়ে প্রশ্ন করুন।’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘ইমাম সংগঠনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করছেন। পুরোহিত সংগঠনে ওঁর লোক আছে। এ সবই ভোটের দিকে তাকিয়ে। সংখ্যালঘুদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির কতটা পূরণ করেছেন? মানুষের কাজ, শিক্ষার মতো জরুরি প্রশ্নের বদলে ধর্মীয় বিষয়ে মনোযোগ ঘুরিয়ে দিচ্ছেন ওঁরা।’’
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে