নবান্নে সর্বদল বৈঠক। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
আলোচনার মাধ্যমেই সব সম্ভব। অবশেষে সেই আলোচনার কাজটাই শুরু করা গিয়েছে। আর তাতেই খুশি তিনি। মঙ্গলবার নবান্নে পাহাড় নিয়ে বৈঠকের পর এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন যে আলোচনা শুরু হয়েছে, তা এখন চলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সে লক্ষ্যেই আগামী ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরকন্যায় ফের বৈঠকে বসবে দু’পক্ষ।
বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের প্রতিনিধি দলকে নিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে তিনি জানান, ‘‘এত দিনে পাহাড় নিয়ে কথা বলা শুরু হল। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। সেটাই শুরু করা গিয়েছে।’’ পাশাপাশি, এ দিনের বৈঠক যে ইতিবাচক হয়েছে তা-ও জানান মমতা। গত ৭৮ দিন ধরে পাহাড়ে বন্ধ চলছে। মমতা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফে ওই প্রতিনিধি দলের কাছে সেই বন্ধ তোলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে দু’পক্ষই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। কিন্তু, কী ভাবে সেই শান্তির পরিবেশ ফিরবে তা নিয়ে কোনও সদর্থক আলোচনা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাহাড়ের প্রতিনিধি দল গোর্খাল্যান্ডের দাবিও তুলেছেন ওই বৈঠকে। কিন্তু, তা নিয়ে রাজ্য সরকার কোনও মন্তব্য করেননি। মমতার কথায়, ‘‘ওঁরা গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানিয়েছেন। গণতন্ত্রে যে কেউ তাঁর মত জানাতে পারেন। কিন্তু সরকারের একটা বাধ্যবাধকতা থাকে। তাই আমরা ওটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ একই কথা জানিয়েছেন মোর্চার চিফ কোঅর্ডিনেটর বিনয় তামাঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শান্তি চাই। পাহাড়বাসীর গোর্খাল্যান্ডের দাবি স্মারকলিপির মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: পাহাড় নিয়ে বৈঠক ইতিবাচক, বললেন মুখ্যমন্ত্রী
বৈঠকে যোগ দিতে আসার আগে মোর্চার ‘নতুন মুখ’ বিনয় তামাঙ্গ শিলিগুড়িতে জানিয়েছিলেন, দিল্লি নয়, পাহাড়কে চেনা ছন্দে ফেরাতে তাঁরা নবান্নের দিকেই এখন তাকিয়ে। আর তাই এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মোর্চা নেতাদের স্বীকারোক্তি, আলোচনা করে দ্রুত পাহাড়ের বন্ধ তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিনয় তামাঙ্গের গলায় শোনা গেল, গত আড়াই মাস ধরে চলা পাহাড়ের অচলাবস্থার নিন্দাও। পাহাড়ে বিস্ফোরণ নিয়ে এনআইএ এবং মোর্চা নেতাদের মৃত্যুর জন্য সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাজ্যই ভরসা, বলছেন বিনয়
দু’পক্ষই পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী। আর এই শান্তির লক্ষ্যেই আগামী ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরকন্যায় ফের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী গৌতম দেব, অরূপ বিশ্বাস, পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন— রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং মোর্চা এবং জিএনএলএফ নেতারা।