‘কে কত বড় নেতা, কত বড় মস্তান, নামটা শুনি!’

মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে টিটাগড় ওয়াগন কারখানার কাজে জনা কয়েক নেতার বাধার প্রসঙ্গ নিজেই তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘কে ওই নেতা? কত বড় নেতা, কত বড় মস্তান, নামটা আমি শুনি!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০৩:২০
Share:

শিল্পে যে তিনি কোনও রকম জুলুমবাজি মানবেন না, তা ফের বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে টিটাগড় ওয়াগন কারখানার কাজে জনা কয়েক নেতার বাধার প্রসঙ্গ নিজেই তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘কে ওই নেতা? কত বড় নেতা, কত বড় মস্তান, নামটা আমি শুনি!’’ তার পরেই সুর আরও চড়িয়ে বলেন, ‘‘আমি বলার পরেও কারখানার কাজে বাধা দিচ্ছে? এত বড় সাহস! ব্যক্তিগত ভাবে পকেটে টাকা ভরার জন্য কারখানা বন্ধ করে দেবেন?’’ অগ্নিশর্মা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তখন আমতা আমতা করছেন টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী।

বৈঠক চলাকালীনই প্রশান্তবাবুকে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, তিনি বলার পরেও কেন ওয়াগন কারখানার রাস্তায় জবরদখলকারীদের সরানো হয়নি? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি বার বার বলার পরেও তা করা হচ্ছে না। এর কারণ কী? একটা কারখানা যেখানে চলছে, সেখানে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে?’’ পুর চেয়ারম্যানের জবাবের তোয়াক্কা না করেই মুখ্যমন্ত্রী টিটাগড়ের ওসি-র কাছে জানতে চান, কেন তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? ওসি জানান, তাঁর কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। শুনে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,‘‘ আমার কাছে অভিযোগ যায়, আর আপনি পান না? আপনাদের অভিযোগ করে তো কোনও লাভ হয় না! তাই আমার কাছে অভিযোগ আসে। আমি অভিযোগ করছি। দ্রুত যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: সন্ত্রাস বা এনএসজি, মোদী-মের্কেল একসুর

এতেও নিশ্চিন্ত না হয়ে অর্জুন সিংহ এবং স্থানীয় বিধায়ক শীলভদ্র দত্তকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, জবরদখলকারীদের সরিয়ে দিতে। একই নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশকেও।

রেলের বরাতের অভাবে সঙ্কটে পড়ে যাওয়া টিটাগড় ওয়াগনস বিকল্প হিসেবে জাহাজ তৈরির কথা ভেবেছেন। দু’টি জাহাজের বরাতও মিলেছে। মিলেছে প্রতিরক্ষা ও নৌ বাহিনীর ছাড়পত্র। কিন্তু শাসক দলের কিছু নেতার মদতে কারখানার প্রবেশপথই একপ্রকার দখল হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় স্তরে বলেও লাভ না হওয়ায় মালিকপক্ষ সরাসরি অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে নিশ্চিন্ত সংস্থার অন্যতম কর্ণধার উমেশ চৌধুরী বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করেও দখলদারদের তুলতে পারিনি। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে বাংলার শিল্পের স্বার্থে পদক্ষেপ করলেন, তা অন্যদেরও উৎসাহিত করবে।’’

এ দিন খড়দহের একটি ইস্পাত কারখানার পাশের জমিতে প্রমোটারি বন্ধের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে সেখানে ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণ হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে খুশি ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন