নন্দীগ্রাম ভুলিনি, মনে করালেন মমতা 

মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা জানেন যিনি নন্দীগ্রামে খুনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই রামের ভাইয়ের নাম কি?’’ ভিড় থেকে জবাব আসে, ‘‘হার্মাদ লক্ষ্মণ শেঠ।’’

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

বাজকুল শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৭
Share:

দু’জনে: বাজকুলের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

এক দশকেরও বেশি অতিক্রান্ত। কিন্তু নন্দীগ্রাম-পর্ব যে তাঁর স্মৃতিতে সমান উজ্জ্বল, তা বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় দেড় বছর পরে নন্দীগ্রামের জেলায় পা রেখে মমতার বার্তা, ‘‘নন্দীগ্রামে সূর্যোদয়ের নাম করে কি ভয়ানক অত্যাচার হয়েছিল আমরা ভুলিনি, বাংলার মানুষ ভোলেনি।’’

Advertisement

বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুলে প্রশাসনিক জনসভা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। গোড়াতেই নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের স্মৃতি উস্কে দেন মমতা। তৃণমূল নেত্রী এ-ও জানান যে প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের তৃণমূলে ঠাঁই হবে না। মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা জানেন যিনি নন্দীগ্রামে খুনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই রামের ভাইয়ের নাম কি?’’ ভিড় থেকে জবাব আসে, ‘‘হার্মাদ লক্ষ্মণ শেঠ।’’ মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসে এদের জায়গা নেই। আমরা হার্মাদদের নিয়ে দল করি না।’’ প্রথমে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত এবং পরে নিজেই বিজেপি ছেড়ে আসা লক্ষ্মণের দাবি, ‘‘তৃণমূলে যাওয়ার চেষ্টা করিনি। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনও গুরুত্ব নেই।’’

স্বাধীনতা সংগ্রামে মেদিনীপুরের ভূমিকা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে নন্দীগ্রামের মানুষের আন্দোলনের কথা আমরা ভুলিনি। নন্দীগ্রাম, খেজুরি, চণ্ডীপুরের কথা ভুলিনি। খেজুরিতে কলেজ ছাত্রী সুজাতা দাসকে কী ভাবে অত্যাচার করে খুন করেছিল সিপিএমের লোকেরা, ভুলিনি।’’ ২০০৭ সালের সেই পর্বে তাঁকে নন্দীগ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, চণ্ডীপুরে সিপিএমের বাহিনী অ্যাসিড বাল্ব নিয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেও অভিযোগ মমতার। বলেন, ‘‘তখন আমাদের রাজ্যপাল ছিলেন গোপাল গাঁধী। তিনি বার্তা পাঠান যে ‘ওকে সরে যেতে বলো। ওকে প্রাণে মেরে দেবে।’ সেই রাতে বাধা উপেক্ষা করেই নন্দীগ্রামে গিয়েছিলাম।’’ মমতার আরও বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের সবাইকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। ১৪ জনকে মেরেছিল। ১৪ জনকে তুলে জাহাজে করে নিয়ে গিয়ে খুন করে হলদি নদীতে ফেলেছিল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পর্যটনেই জোর মুখ্যমন্ত্রীর

সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামকে ওঁরাই শ্মশানে পরিণত করেছেন। কিছু করতে পারেননি, কিছু বলার নেই বলে পুরনো রেকর্ড বাজাতে হচ্ছে।’’ সিপিএমের ‘হার্মাদ’রাই বিজেপির ‘জল্লাদ’ হয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেলিমের অভিযোগ, ‘‘এ রাজ্যে খাল কেটে বিজেপিকে ডেকে আনেন উনি।’’ আর বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘সিপিএম বলছে, বিজেপি-তৃণমূল এক হয়েছে। তৃণমূল বলছে, বিজেপি-সিপিএম এক হয়েছে। আমি বলছি বিজেপি একাই একশো। বিজেপি একাই চলে তৃণমূলকে রুখবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন