‘এত শক্তি ওরা পাচ্ছে কোথা থেকে?’

রাজ্য গোয়েন্দারা জেনেছেন, সিকিম ও নেপালের রাস্তা ধরে মোর্চার কাছে রসদ পৌঁছচ্ছে। আসছে অস্ত্রশস্ত্র এবং রেশন। মোর্চা নেতাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কেউ কেউ বাংলাকে ভাগ করার পরিকল্পনা করছে। ষড়যন্ত্র না থাকলে এত আগ্নেয়াস্ত্র কেউ জোগাড় করতে পারে না। তা সত্ত্বেও মনে রাখবেন পাহাড়ে শান্তি আমরা ফিরিয়ে আনব।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০৩:৪৫
Share:

পাহাড়ে গোলমালের পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু ষড়যন্ত্রই নয়, গোর্খা আন্দোলনের পিছনে জঙ্গি যোগের প্রমাণও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘এত শক্তি ওরা পাচ্ছে কোথা থেকে? এত টাকা আসছে কোথা থেকে?’’

Advertisement

রাজ্য গোয়েন্দারা জেনেছেন, সিকিম ও নেপালের রাস্তা ধরে মোর্চার কাছে রসদ পৌঁছচ্ছে। আসছে অস্ত্রশস্ত্র এবং রেশন। মোর্চা নেতাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কেউ কেউ বাংলাকে ভাগ করার পরিকল্পনা করছে। ষড়যন্ত্র না থাকলে এত আগ্নেয়াস্ত্র কেউ জোগাড় করতে পারে না। তা সত্ত্বেও মনে রাখবেন পাহাড়ে শান্তি আমরা ফিরিয়ে আনব।’’

মুখ্যমন্ত্রীর এই খোঁচা যে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির উদ্দেশে, তা নিয়ে সংশয় নেই রাজনৈতিক মহলে। মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, এর পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক দলের মদত রয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী ঘুরিয়ে বলেন, ‘‘এই ধরনের শক্তির পিছনে কেউ দাঁড়াবে না বলেই আশা করি। তবে এর যোগসূত্র অনেক দূর পর্যন্ত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: রণক্ষেত্র পাহাড়ে নিহত ৪

সেই সূত্র ধরেই এ দিন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘‘উনি তো সেনাতেও ষড়যন্ত্র দেখেন। বিমান দেরিতে নামলেও ষড়যন্ত্র দেখেন।’’ তবে মোর্চার নেতারা যে ভাবে গোর্খাল্যান্ডের দাবি ফের প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন, সেই প্রশ্নে বিজেপি সভাপতি নিজেদের অবস্থান আজও স্পষ্ট করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান তৈরি করা বাকি রয়েছে।’’

আর এখানেই ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত রয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন। তাঁদের এক প্রথম সারির নেতা দাবি করছেন, বিজেপির সহযোগী দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ফলে মোর্চার কর্মসূচির সঙ্গে বিজেপির যোগ নেই, এ কথা হলফ করে বলা যায় না। তাঁর দাবি, রাষ্ট্রপতি ভোটের আগে বিজেপি চাপের রাজনীতি করছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চমকে কোনও লাভ হবে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এ দিন ঘনিষ্ঠ মহলে বলেন, আন্দোলনকারীদের তরফে নানা রকম উস্কানি সত্ত্বেও পুলিশ গুলি চালায়নি, বরং মার খেয়েছে। গুলি আন্দোলনকারীরাই চালিয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, উত্তর পূর্বের জঙ্গিরা যে পাহাড়ে রসদ জোগাচ্ছে, তা এ দিন যথেষ্ট ভেবেচিন্তেই ফাঁস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি নেপাল সীমান্তের কথা মাথায় রেখে দার্জিলিং পরিস্থিতির আন্তর্জাতিক গুরুত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দার্জিলিঙের যা ভৌগোলিক অবস্থান সেখানে যদি উগ্রপন্থার ছকে আন্দোলন হয়, তা হলে বুঝতে হবে সমস্যা গভীরে। জাতীয় পতাকা হাতে পাথর ছোড়া, বোমা ছোড়া চলছে। পাহাড় কি কাশ্মীর হয়ে গেল?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন