Bengali Language

‘বাংলার চাই ধ্রুপদী মর্যাদা’, ভাষার জন্য মোদীকে চিঠি মমতার, চার খণ্ডের গবেষণাপত্রও তৈরি

বাংলার প্রাচীনতা নিয়ে চার খণ্ডের একটি গবেষণাপত্র তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। সেটা সামনে রেখেই বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন মমতা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২৩
Share:

বাংলা ভাষার স্বীকৃতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (বাঁ দিকে) চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিতে হবে। এই আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, বাংলা ভাষার প্রাচীনত্ব প্রমাণ করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিস্তারিত এবং দীর্ঘ গবেষণা করা হয়েছে। তার মাধ্যমে বাংলার আড়াই হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস জানা গিয়েছে। এই ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ওই গবেষণাপত্রের সারাংশও কেন্দ্রকে পাঠিয়েছে রাজ্য।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তামিল, তেলুগু, সংস্কৃত, কন্নড়, মালয়ালম এবং ওড়িয়া ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলা অনেক ব্যাপারেই বঞ্চিত। আমরা গবেষণা করে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছি। আড়াই হাজার বছর ধরে বাংলা ভাষায় জনমত বিবর্তিত হয়েছে। এই ভাষাও তাই কেন্দ্রীয় স্বীকৃতির যোগ্য।’’

বাংলার প্রাচীনতা নিয়ে চার খণ্ডের একটি গবেষণাপত্র তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। এত দিন বাংলা এই স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত থাকার কারণ হিসাবে আগের সরকারের নিষ্ক্রিয়তার দিকেও আঙুল তুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার অনেক দিন আগেই জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ার কথা ছিল। এখানেও বাংলা বঞ্চিত হয়েছে। এই অপদার্থতা আমাদেরই। যাঁরা আগে ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা এ নিয়ে কোনও চেষ্টা করেননি। রাজনীতির বাইরে কিছুই তাঁরা করেননি।’’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি।

প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, বাংলা সারা দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কথিত ভাষা। বিশ্বের নিরিখে এই ভাষার স্থান সপ্তম। ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে কেন্দ্রের স্বীকৃতির জন্য যে যে বৈশিষ্ট্য দরকার, বাংলায় তা আছে।

প্রধানমন্ত্রীকে আরও একটি চিঠি দিয়েছেন মমতা। দ্বিতীয় চিঠিতে গঙ্গাসাগর মেলার জাতীয় স্বীকৃতি চাওয়া হয়েছে। মমতা বলেন, ‘‘আগেও আমরা গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছি। আবার দিলাম। কুম্ভমেলা যদি স্বীকৃতি পায়, গঙ্গাসাগর মেলা কেন পাবে না? এই মেলা প্রতি বছর হয়। প্রচুর জনসমাগম হয় সেখানে। এ বারও এক কোটির বেশি লোক হবে বলে আমরা আশা করছি। কোন অংশে অন্য মেলার থেকে তা কম?’’

চিঠিতে গঙ্গাসাগর মেলার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে মমতা জানিয়েছেন, আকার এবং ব্যাপ্তির দিক থেকে কুম্ভমেলার পরেই এই মেলার স্থান। গুরুত্বে কুম্ভের থেকে গঙ্গাসাগর কোনও অংশে কম নয়। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে এই মেলা হয়। রামায়ণ, মহাভারত এমনকি, কালীদাসের রঘুবংশ নাটকেও এই মেলার উল্লেখ রয়েছে। এ বছর গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে রাজ্য সরকার ২৫০ কোটি টাকা খরচ করেছে বলে জানিয়েছেন মমতা।

এ ছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টে ‘বাংলা’ করার দাবিও আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে রেখেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান নামটি ‘ডব্লিউ’ দিয়ে শুরু হয়। নাম বদলে ‘বাংলা’ করা হলে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ছেলেমেয়েদের সুবিধা হবে। কাজের জন্য আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। অনেক বার এই আর্জি কেন্দ্রকে জানিয়েছি। যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আবার বলছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন