(বাঁ দিক থেকে) উদয়ন গুহ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
কোচবিহারে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভুপবাহাদুরের মূর্তি বসানো নিয়ে যে টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক ফোনেই তার অবসান। হল। মিটল তৃণমূলের ‘ঘরের দ্বন্দ্ব’ও! ঠিক হল, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনেই বসবে মহারাজার মূর্তি।
সাগরদিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কোচবিহার পুরসভা। সেইমতো শুক্রবার মূর্তি বসানোর কাজ শুরু হতেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের আপত্তিতেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর অভিযোগ ছিল, প্রথমত, তাঁকে জানানো হয়নি। না-জানিয়েই মূর্তি বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, দফতরের সামনে মূর্তি বসানো হলে গেট বন্ধ হয়ে যাবে। আসা-যাওয়ায় সমস্যা হবে। পার্কিংয়েও সমস্যা হবে বলে দাবি করেন উদয়ন।
মূর্তি বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। যে ভাবে কাজ বন্ধ করা হয়েছে, তার প্রতিবাদও করেন তিনি। এ ভাবে তৃণমূলের দুই নেতার বিবাদ প্রকাশ্যে চলে আসায় বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয় জেলায়। তা অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হল না। শনিবারই হস্তক্ষেপ করে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
উদয়ন জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ফোন করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন মূর্তি বসানো নিয়ে কী সমস্যা হচ্ছে। পরে তিনিই নির্দেশ দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনেই মূর্তি বসবে। তাতে গেট আটকাবে না বলেও উদয়নকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উদয়ন বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে আমি এখনও জানি না কে এই মূর্তি স্থাপন করছে। গতকাল যখন দফতরের সামনে কিছু শ্রমিক গর্ত খুঁড়ছিলেন, সেই সময় আমি জেলাশাসক এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে বিষয়টি জানাই। তাঁরা কী পদক্ষেপ করেছেন, আমার জানা নেই। যদি আলোচনা করে অথবা দফতরকে চিঠি দিয়ে জানানো হত, তা হলে এত বিতর্ক হত না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে মূর্তি বসবে। হয়তো দশ ফুট বাঁ দিকে অথবা ১০ ফুট ডান দিকে। মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। উনি বলেছেন, ভাল করে করে দাও। গেট আটকাবে না।’’
রবিও পরে বলেন, ‘‘রাজার মূর্তি যে স্থানে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেখানেই বসবে।’’