মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মিষ্টির উপর জিএসটি চাপানো নিয়ে ফের এক বার কেন্দ্র বিরোধী লড়াইয়ে নামছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মিষ্টি ব্যবসায়ীর কথা ভেবে কেন্দ্রকে আরও এক বার চিঠি দেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার কলামন্দিরে ব্যবসায়ী সংগঠনের এক সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে বসেই টেলিফোনে বক্তৃতা করেন। মিষ্টির প্রসঙ্গও তিনি তোলেন এ দিন।
সেখানে মমতা জানান, রাজ্য জিএসটির বিরোধী নয়। কিন্তু যে ভাবে তাড়াহুড়োয় নতুন কর ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হল, তা ঠিক হয়নি। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজ্য সব সময় লড়াই চালিয়ে যাবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে মিষ্টির উপর কর বসানো নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ।
এর আগে মিষ্টির উপর কোনও কর ছিল না। কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় মিষ্টির উপর ৫% হারে কর বসেছে। শুধু তাই নয়, মিষ্টি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ছানার মিষ্টির সঙ্গে যদি চকলেট বা বাদাম দেওয়া হয় তা হলে তার দাম বেড়ে যাবে। যদিও জিএসটি কাউন্সিল জানিয়ে দিয়েছে, মিষ্টির সঙ্গে চকলেট, বাদাম বা অন্য কোনও কিছু মেশানো হলেও তা মিষ্টিই থাকে। ফলে সব ক্ষেত্রেই ৫% হারেই কর নেওয়া হবে। জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকেই কলকাতার বহু বড় দোকানে মিষ্টির দাম প্রতি পিসে গড়ে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ জিএসটি হওয়ার পরও ১০ টাকার একটি মিষ্টির দাম সাড়ে ১০ টাকা হওয়া উচিত। কেন এ ভাবে দাম বাড়ানো হল, তা নিয়েও জিএসটি কাউন্সিল খোঁজ খবর করছে।
যদিও মিষ্টির উপর কর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাজ্য সরকারের। রাজ্যের বক্তব্য, ‘‘বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মিষ্টি জড়িয়ে রয়েছে। তার উপরে কর বসিয়ে আসলে রাজ্যের সংস্কৃতির উপরই হামলা হয়েছে।’’ এক কর্তার কথায়, ‘‘রসগোল্লা, পান্তুয়া, সন্দেশ খেতেও কর দিতে হবে এটা ভাবা যায় না। সেই কারণে জিএসটি কাউন্সিলের কাছে মিষ্টির উপর কর প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলা হবে। কাউন্সিল চাইলেই তা করতে পারে।’’
তবে কর কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, মিষ্টির উপর যে টুকু কর বসেছে তা ব্যবসায়ীরা নিলে দাম বেশি বাড়ার কথা নয়। ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের উপরও কর বসার কোনও চাপ নেই। তার পরেও দাম বাড়ছে কেন সে নিয়েই ধন্দে তাঁরা।