ফাইল চিত্র।
উত্তর বা দক্ষিণ নয়, তাঁর কাছেও পশ্চিমবঙ্গের সবটাই এক। বৃহস্পতিবার বাগডোগরা থেকে কলকাতা যাওয়ার আগে এ কথাই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক দিন আগে ধূপগুড়িতে এক জনসভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রায় একই কথা জানিয়েছিলেন। তৃণমূলের একাংশের দাবি, বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়ে এ দিন অভিষেকের কথাকেই কার্যত মান্যতাদিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
অভিষেক এ দিনও বলেন, ‘‘একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ। আমি ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি গিয়েছিলাম। আমি বাংলায় আছি, বাংলায় গিয়েছি। উত্তরবঙ্গে নয়, বঙ্গে গিয়েছিলাম।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে চার দিনের পাহাড় সফর সেরে কলকাতা ফেরেন মমতা। তার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরের ঢোকার মুখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার কাছে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গ সবটাই সমান। সবাই শান্তিতে থাকুন। ভাল থাকুন, এটাই আমরা চাই।’’
মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে এই বাগডোগরাতেই দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যে কর্মসংস্থানের বাস্তব চিত্র নিয়ে। দাবি করেছিলেন, খাতায়-কলমে যা বলা হচ্ছে, কার্যক্ষেত্রে কর্মসংস্থান তার ধারেকাছেও নেই। এ দিন সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানে কর্মসংস্থান ভালই হচ্ছে এবং বাড়ছে।’’
গত বছর বিধানসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির একটি অংশ ‘উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত’ বলে দাবি তুলতে শুরু করে। এই অংশে ছিলেন জন বার্লার মতো সাংসদও।
একটি সূত্রের বক্তব্য, এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবিও ওঠে। সেখানে বিজেপি নেতাদের পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে বলেও দাবি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক প্রায় সব ক’টি ভোটেই উত্তরবঙ্গে বিজেপিকে বাংলা ভাগে ইন্ধন দেওয়ার দায়ে কাঠগড়ায় তুলে প্রচার করেছে শাসকদল। তাতে সাফল্য এসেছে বলেও তৃণমূল সূত্রে দাবি। এর পরেই ধূপগুড়ির সভায় অভিষেক জানান, উত্তর বা দক্ষিণ নয়, তাঁর কাছে পশ্চিমবঙ্গই বাস্তব।
কিন্তু সাংসদ বললেও সর্বোচ্চ নেত্রী কী বলেন, সে দিকে তাকিয়ে ছিল দল। এ দিন ফেরার পথে মমতা নিজে থেকেই বললেন, উত্তর বা দক্ষিণ নয়, তাঁর ভাবনাতেও সবটাই পশ্চিমবঙ্গ।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘এ সব তখনই মুখ্যমন্ত্রীর শোভা পেত, যদি উত্তরবঙ্গে এমসের মতো প্রস্তাবিত হাসপাতাল করতে দেওয়া হত। তা না করে উনিই সেটাকে টেনে নিয়ে গেলেন কলকাতার কাছে। তা হলে উত্তরবঙ্গের মানুষ কি বঞ্চিত হলেন না?’’ যা শুনে এক তৃণমূল নেতার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘রায়গঞ্জের সঙ্গে বাকি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা কেমন, সুকান্ত জানেন না?’’