প্রখর রোদে বনপথে মমতা

৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা। স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। তাতে কী? খর রোদ মাথায় নিয়ে সকাল সওয়া দশটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত বন-পথে হাঁটলেন তিনি।

Advertisement

কিশোর সাহা

সুকনা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৪
Share:

৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা। স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। তাতে কী? খর রোদ মাথায় নিয়ে সকাল সওয়া দশটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত বন-পথে হাঁটলেন তিনি। শুক্রবার শিলিগুড়ি উপকণ্ঠে সুকনা লাগোয়া মহানন্দা অভয়ারণ্যে ১০ কিলোমিটার রাস্তায় একাধিক পর্যটন প্রকল্পের কাজের গতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

কোথাও গাছের গুঁড়ি দিয়ে বসার ব্যবস্থা দেখে প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার কোথাও তাড়াহুড়ো করে সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য বকুনি দিলেন কর্মীদের। নদীর জলে পা ডুবিয়ে বসলে পর্যটকদের নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত থাকবে কি না সেটাও হাতে-কলমে পরখ করলেন। পরিদর্শনের পরে বনকর্মীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে দেদার ছবি তোলার আবদারও মানলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হবে। তা বলে মানের সঙ্গে যেন আপস না হয়। সে দিকে খেয়াল রাখবেন।’’

বন দফতর সূত্রে খবর, গত বছরের শেষে সুকনা বনবাংলো থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার হেঁটে তিন দিকে পাহাড় জঙ্গল ঘেরা মহানন্দা নদীতে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্জনতা বজায় রেখে অরণ্যের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান যাঁরা তাঁদের জন্য ওই রাস্তাটি শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করতে সেই সময় তিনি বন দফতরকে নির্দেশ দেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:মোদীর সেনাপতি অমিতের শক্ত হাতেই বঙ্গের রাশ

তাঁর নির্দেশেই এরপর ‘স্বপ্নসৃষ্টি’, ‘মনোদিয়া’ ও প্রকৃতি-উচ্ছ্বাস (নেচারস স্মাইল) প্রকল্পের কাজ শুরু করে বন বিভাগ। উন্নত করা হয় জঙ্গল চিরে চলে যাওয়া পিচ রাস্তার মান। জঙ্গলের দু’ ধারে পড়ে থাকা কিছু গাছের গুঁড়ি বাছাই করে ১ কিলোমিটার অন্তর জিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। পথেই হরিণের বিচরণ ক্ষেত্র। বিশাল তারজালি দিয়ে ঘেরা শাল-সেগুনের জঙ্গলে রয়েছে শতাধিক হরিণ। সেখান থেকে কিছুটা এগোলেই বইছে মহানন্দা। এখানেও গাছের গুড়ি ফেলে বসার ব্যবস্থা। পাড়ে উঁচু বাঁধের ধারে তৈরি হচ্ছে ‘মনোদিয়া’ নামের দোতলা ‘ওয়াচ টাওয়ার’। যেখানে থাকছে শৌচাগার ও হালকা খাবার ও বিশ্রামের ব্যবস্থাও। গোটা বন-পথেই রয়েছে হাতি-চিতাবাঘের আনাগোনা। ময়ূর-হরিণ-বাঁদর-বুনো খরগোস, বনমুরগিও কম নেই। কাউকে যাতে বিরক্ত না করা হয় সে কথা মাথায় রেখে সারা দিনে দু থেকে তিন দফায় ২৫ জন করে বড় জোর ৭৫ জনকে যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হবে। আগাগোড়া থাকবে সশস্ত্র পাহারা। থাকবে সিসি ক্যামেরাও। বিপদে পড়লে তখনই সুকনা হাসপাতালে পৌঁছে দিতে গাড়ির ব্যবস্থাও থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন