ফাইল চিত্র।
ঠিক এক মাস আগের কথা। তৃণমূল ভবনে কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর সিংহের হাতে শাসক দলের পতাকা তুলে দিতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, আরও বড় দলবদল বাকি। তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘ইশারা হি কাফি!’’ সেই ‘ইশারা’র মানে কে বা কারা, তার উত্তর খুঁজতে নজর থাকছে ২১শে-র সমাবেশে।
প্রতি বছরই ২১ জুলাইয়ের আগে সম্ভাব্য দলবদল ঘিরে জল্পনায় মশগুল থাকে রাজ্য রাজনীতি। আবার এমনও হয়, জল্পনা থাকে যাঁদের নিয়ে, তার বাইরে সম্পূর্ণ অন্য কেউ গিয়ে ধর্মতলায় মমতার মঞ্চে ওঠেন! যেমন হয়েছিল অসিত মাল, উমাপদ বাউড়িদের ক্ষেত্রে। এ বার জোর জল্পনা কংগ্রেসের তিন বিধায়ককে নিয়ে। এক জন মালদহের, মমতার প্রথম ইনিংসে জোট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। দ্বিতীয় জন মুর্শিদাবাদের, কিছু দিন আগেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। আর তৃতীয় জন পশ্চিম বর্ধমান জেলার। সেখানে আসন্ন পুরভোটের আগে যাঁর স্ত্রীকে ডেপুটি মেয়র প্রার্থী করার আশ্বাস দিয়ে দলে টেনেছে তৃণমূল।
এই ধরনের জল্পনার কোনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি কোনও তরফে থাকে না। এ বারও নেই। মুর্শিদাবাদের ওই বিধায়ক যেমন প্রশ্ন করলেই বলছেন, ‘‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না। তবে যদি অন্য দলে যাই, সাংবাদিক সম্মেলন করে সকলকে জানিয়েই যাব!’’ রানাঘাটের শঙ্করবাবু তৃণমূলে চলে যাওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই জল্পনায় ঢুকে পড়েছে উত্তরবঙ্গের এক প্রাক্তন সাংসদের নামও। এমনও বলা হচ্ছে, তাঁকে ঘরে নিয়ে রাজ্যসভার আসন্ন নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে ষষ্ঠ প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করতে পারে শাসক দল। তবে তিনি নিজে এবং তৃণমূলের একেবারে শীর্ষ মহল— দু’পক্ষই কংগ্রেসের ওই প্রাক্তন সাংসদের দলবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন। কংগ্রেস এবং বাম নেতৃত্বও এ বার বাড়তি নজর রাখছেন ২১শে-র মঞ্চের দিকে। কারণ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনই দুই বিরোধী দলের পরিষদীয় নেতাদের ডেকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বিজেপি-র বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে রাজ্যে। তাঁরা যেন ঘর সামলে রাখেন। কংগ্রেস-সিপিএম থেকে কেউ যেন বিজেপি-তে না যান। বিরোধীরা পাল্টা বলেছিলেন, দল ভাঙিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে দুর্বল করছে তো তৃণমূলই! মুখ্যমন্ত্রীর সে দিনের আবেদনের পরে তৃণমূলই ফের দল ভাঙায় কি না, সে দিকেই নজর রাখছেন অধীর, সুজন চক্রবর্তীরা।
দু’দিন আগেই শহরে এসে পৌঁছনো তৃণমূল কর্মীদের থাকার জন্য শিয়ালদহ, হাওড়া, বড়বাজারের ধর্মশালা ছা়ড়াও মিলনমেলা ও কসবার গীতাঞ্জলি স্টে়ডিয়াম খুলে দেওয়া হয়েছে।