প্রকল্প রূপায়ণে দেরি কেন? অধিকারী ‘গড়ে’ই শিশিরকে ধমক মমতার

ঝাঁঝিয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আমাকে জানাননি কেন? কেন এখানে এসে শুনতে হল? দু’-দু’টো বছর পিছিয়ে দিলেন। মনে রাখতে হবে, সরকারেরও টাকার দাম আছে।’’

Advertisement

দেবজিৎ ভট্টাচার্য

দিঘা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৯
Share:

অসন্তোষ: পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

সমুদ্রে চোখ রেখে সৈকতপথ দিয়ে গাড়িতে পর্যটকেরা দিঘা থেকে চলে যাবেন মন্দারমণি— স্বপ্নের প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০১৪-এ তিনি ওই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু ২০১৭-তে এসেও ঠিক হয়নি, কোন দফতর তা রূপায়ণ করবে!

Advertisement

বুধবার সকালে প্রকল্পের হাল সরেজমিন দেখতে গিয়েছিলেন মমতা। কাজ প্রায় কিছুই এগোয়নি দেখে ক্ষুব্ধ হন তিনি। এর পর পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে কার্যত তুলোধোনা করেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে। ‘অধিকারী’ পরিবারের ‘গড়ে’, ছেলে তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সামনে শিশিরবাবুকে ধমক খেতে দেখে চমকে যান সকলেই।

শিশিরবাবু দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের (ডিএসডিএ) চেয়ারম্যান। ওই পর্ষদই ‘মেরিন ড্রাইভ’ প্রকল্পের ‘নোডাল’ দফতর। সেই সূত্রেই কাজের টালবাহানা নিয়ে তাঁকে চেপে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দু’বছর আগে দিঘায় মেরিন ড্রাইভ নিয়ে বৈঠক করে গিয়েছিলাম। তখন সেচ দফতরকে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তা হলে কেন এত দিনেও কাজ এগোল না?’’ শিশিরবাবু আমতা আমতা করে বলেন, ‘‘সেচ দফতর জানিয়েছে ওদের টাকা নেই। এত বড় কাজ করতে পারবে না।’’

Advertisement

ঝাঁঝিয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আমাকে জানাননি কেন? কেন এখানে এসে শুনতে হল? দু’-দু’টো বছর পিছিয়ে দিলেন। মনে রাখতে হবে, সরকারেরও টাকার দাম আছে।’’

আরও পড়ুন: অমর্ত্যের কণ্ঠরোধে ক্ষমতার স্পর্ধা দেখছে শহর

সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, জুহুর আদলে দিঘা থেকে মন্দারমণি পর্যন্ত ৪০ কিমি মেরিন ড্রাইভ তৈরি হলে অনেক কম সময়ে কলকাতা থেকে দিঘা পৌঁছনো যাবে। তা ছাড়া, সৈকতপথে গাড়ি চালানোর মজা নিতে পর্যটকের ভিড়ও বাড়বে।

কিন্তু কাজ এগোতে সমস্যাটা কোথায়? ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, দিঘা লাগোয়া মোহনা এবং শঙ্করপুরের মুখে দু’টি ও মন্দারমণির আগে একটি খাল রয়েছে। এ গুলির উপরে সেতু তৈরি নিয়েই একাধিক সরকারি দফতর এবং ডিএসডিএ-র মধ্যে টানাপড়েন চলছে দু’বছর ধরে।

শিশিরবাবু প্রকল্পের দায়িত্ব হলদিয়া উন্নয়ন পর্যদকে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তা নাকচ করে পূর্ত দফতরকে ভার দেন তিনি। পূর্তসচিব ইন্দিবর পাণ্ডে তাঁকে জানান, প্রকল্প শেষ হতে দেড় থেকে দু’বছর লাগবে। শুনে ফের রেগে যান মমতা। বলেন, ‘‘আমাকে কাজ শেখাতে এসো না। দিঘা-তমলুক রেললাইন পাতার সময় ইঞ্জিনিয়ারেরা ন’বছর সময় চেয়েছিল। আমি ন’মাসে করে দিয়েছিলাম।’’ শেষ পর্যন্ত ইন্দিবরকে এক বছর সময় দিয়ে প্রসঙ্গে ইতি টানেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন