এই ব্যাগই বিক্রি হচ্ছিল লক্ষ্মীপুরে। নিজস্ব চিত্র
স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে পড়ুয়াদের জন্য দেওয়া ব্যাগ খোলা বাজারে বিক্রি হওয়ার অভিযোগ উঠল বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকায়। মঙ্গলবার দুপুরে নীল রঙের ব্যাগগুলিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোগোর (বিশ্ববঙ্গ লোগো) উপরে একটি বেসরকারি কোম্পানির লোগো দিয়ে ওই ব্যাগ বিক্রি করছিলেন এক ব্যক্তি। ব্যাগের রং ও আকার দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ব্যাগ পরীক্ষা করতেই আসল তথ্য বেরিয়ে আসে। স্থানীয় কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় ব্যাগগুলি পুলিশ উদ্ধার করে। স্কুলশিক্ষা দফতর বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে।
পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীর কাঁধে ব্যাগ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এ বছরই মার্চেই নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই অনুযায়ী রাজ্যের সব জেলার সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে ব্যাগ সরবরাহ শুরু হয়েছে। নীল রঙের ব্যাগের উপরে বিশ্ববাংলার ‘ব’ লেখা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ দিন দুপুরে কৈলাস দাস নামে লক্ষ্মীপুরেরই এক বাসিন্দা রাস্তার ধারে বসে কিছু স্কুল ব্যাগ নিয়ে বিক্রি করছিলেন। ৭০ টাকায় ওই ব্যাগ বিক্রি হচ্ছিল। স্কুলের দেওয়া ব্যাগের সঙ্গে ওই ব্যাগের হুবহু মিল থাকায় সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। তাঁরা খবর দেয় কাউন্সিলর সেলিম খানকে। কাউন্সিলর এসে ওই ব্যাগের উপরে বেসরকারি কোম্পানির লোগো সাঁটানো কাপড় খুলতেই সবার চক্ষু চড়কগাছ! বেসরকারি লোগোর নীচেই ঢাকা ছিল বিশ্ববাংলা লোগো। খবর ছড়াতেই ভিড় জমে যায় সেখানে। সেলিম খান বর্ধমান থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে প্রায় ৭০টি ব্যাগ উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
ব্যাগ বিক্রেতার দাবি, তিনি শহরের বিভিন্ন জায়গায় জামাকাপড় ফেরি করেন। সম্প্রতি এক ব্যক্তি তাঁকে ওই ব্যাগ দিয়ে দিনে ১৫০ টাকা মজুরিতে বিক্রি করতে বলেন। তাই তিনি ব্যাগ বিক্রি করছিলেন। ওই ব্যাগগুলি যে আসলে সরকারের, সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও কৈলাসের দাবি। এলাকাবাসী পাপ্পু সাউ, কবিতা সিংহরা বলেন, ‘‘ব্যাগ দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। তাই কাউন্সিলরকে খবর দিই।’’ ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে যে ব্যাগ দেওয়ার কথা, তা খোলা বাজারে কী ভাবে চলে আসছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্যাগ বিক্রেতাকে অবশ্য পুলিশ আটক করতে পারেনি।
জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। স্কুল শিক্ষা দফতরকে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।’’ তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথ রায়।