ব্যাঙ্কের লাইনে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু, ধারে শ্রাদ্ধ

পাঁচজন শ্রমিক লাগিয়ে দেড় বিঘা জমির ধান কাটিয়েছিলেন কয়েকদিন আগেই। কিন্তু নোট বাতিলের গেরোয় হাতে খুচরো টাকা না থাকায় মজুরি দিতে পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৬
Share:

মৃত নিতাই মণ্ডল।—নিজস্ব চিত্র

পাঁচজন শ্রমিক লাগিয়ে দেড় বিঘা জমির ধান কাটিয়েছিলেন কয়েকদিন আগেই। কিন্তু নোট বাতিলের গেরোয় হাতে খুচরো টাকা না থাকায় মজুরি দিতে পারেননি। সেই মজুরির হাজার টাকা মেটাতে ও সংসারের খরচের জন্য মোট দু’হাজার টাকা তুলতেই ব্যাঙ্কে লাইন দিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব নিতাই মণ্ডল।

Advertisement

নালাগোলার বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কে শুক্রবার প্রায় তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর ব্যাঙ্কের কাউন্টারের সামনে যখন পৌঁছন নিতাইবাবু, তখনই আচমকা লুটিয়ে পড়েন। নালাগোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। সন্ধেতেই মারা যান তিনি। নিতাইবাবুর ভাই ও প্রতিবেশীদের আক্ষেপ, ‘‘উনি যে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন সেটুকুও তুলতে পারেননি। ওই পরিবারের এমনই আর্থিক পরিস্থিতি যে শেষ পর্যন্ত ধারদেনা করে শুক্রবার রাতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হয়েছে।’’

গাজোল ব্লকের চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিশু পিড়ালুতোলা গ্রামে বাড়ি নিতাইবাবুর। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী পুষ্পদেবী ও ছোট ছেলে রঞ্জিত। বড় ছেলে প্রসেনজিৎ বেঙ্গালুরুতে দিনমজুরের কাজ করেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দেড় বিঘে জমির ধান ধান বিক্রি করে ও বড় ছেলে বেঙ্গালুরু থেকে দিনমজুরি করে মাসে মাসে যে টাকা পাঠান তা দিয়েই সংসার চলে। বাবার সঙ্গে ব্যাঙ্কে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্র রঞ্জিত। চোখের সামনে বাবাকে লুটিয়ে পড়তে দেখে দিশেহারা সে। তার কথায়, ‘‘অভাবের জন্য দাদা সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে শ্রমিকের কাজ করতে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে। আমাকে হয়তো সেই পথেই যেতে হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন