বামেদের সঙ্গে জোট নয়, কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনে আন্দোলন চান মানস

সিপিএমের সঙ্গে দল জোটে গেলে তিনি তীব্র বিরোধিতা করবেন বলে ফের স্পষ্ট করলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। উল্টে তাঁর পরামর্শ, দলের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে আন্দোলনই একমাত্র হাতিয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৬
Share:

মেদিনীপুর শহরে একটি অনুষ্ঠানে বক্তা কংগ্রেস বিধায়ক। —নিজস্ব চিত্র।

সিপিএমের সঙ্গে দল জোটে গেলে তিনি তীব্র বিরোধিতা করবেন বলে ফের স্পষ্ট করলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। উল্টে তাঁর পরামর্শ, দলের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে আন্দোলনই একমাত্র হাতিয়ার। সংগঠনের প্রধান সে পথে না হাঁটায় ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি দলের শাখা সংগঠন সংখ্যালঘু বিভাগের হয়ে তিনি রাজ্য সফর শুরু করবেন বলেও জানিয়েছেন। ১৯ জুলাই থেকে সেই সফর চলবে টানা এক বছর।

Advertisement

মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরের সিপাইবাজারে একটি ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মানসবাবু। অনুষ্ঠান শেষে কংগ্রেস ভবনে যান। কংগ্রেস ভবনে এসেছিলেন দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি স্বপন দুবে, রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ রফিক, কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়রা। দলবদল নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মানসবাবু সাফ জানিয়ে দেন, “আমি যেখানে ছিলাম, সেখানেই রয়েছি। এমন প্রশ্ন অবান্তর।”

তৃণমূলকে আটকাতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও দল না দেখে জোট গড়ার কথা বলছেন। তা-ও ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস একা লড়াই করবে? মানসবাবুর জবাব, “৩৪ বছরে ১৭ হাজার কংগ্রেস কর্মীকে খুন করেছে যে সিপিএম, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলাটা ঠিক হবে না।” একই সঙ্গে তিনি মানছেন, বর্তমানে কংগ্রেস যে ভাবে চলছে, সেটা ঠিক পথ নয়। অবিলম্বে কংগ্রেসকে আন্দোলনের পথে হাঁটতে হবে। না হলে দল টিকিয়ে রাখা অসম্ভব। মানসবাবুর কথায়, “পুরুলিয়া থেকে পাহাড় পর্যন্ত জনজাগরণ যাত্রা করার প্রস্তুাব দিয়েছিলাম। পাঁচ মাসেও সে ব্যাপারে দল উদ্যোগী হয়নি। কংগ্রেস তো সভাপতি নির্ভর দল।” এ ক্ষেত্রে বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকেই আন্দোলন বিমুখ বোঝাতে চেয়েছেন মানস। আর একাধিক বিধায়ক, যুব-ছাত্রনেতার কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে মানসের ব্যাখ্যা, “যাঁরা কংগ্রেস করেন, তাঁরা নিজেদের পকেট থেকে টাকা খরচ করে দল করেন। বিনিময়ে একটু ভালবাসা, সম্মান চান। এই জায়গায় খামতি থেকে যাচ্ছে। তাই কর্মীদের মধ্যে হতাশা জাগছে।”

Advertisement

কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতে সংখ্যালঘু বিভাগের হয়ে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মানসবাবু। সদ্য যে বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন খালিদ ইবাদুল্লা। ১৯ অগস্ট এই সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন হবে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। তার আগে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়াবেন মানসবাবু। তৃণমূলও তো সংখ্যালঘুদের কাছে টানতে নানা কৌশল নিচ্ছে। কংগ্রেস কি পারবে সংখ্যালঘুদের কাছে টানতে? মানসবাবুর কথায়, “ঘুরে ঘুরে সেটাই তো দেখব, বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য যা বলেছে, ঘোষণা করেছে, তার বাস্তব চেহারাটা কী!”

কিন্তু জোটের বিরোধিতা কেন? মানসবাবু বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে জোটের সময়েও আসন সমঝোতায় অনড় মনোভাব দেখিয়েছিলাম। তখন তা মানলে এত অসুবিধেয় পড়তে হত না। ঠিক পথে চললেই হয় কট্টরপন্থী, নয় নরমপন্থী বলা হচ্ছে। তাহলে আমি কোন পথে চলব?” মানসবাবু এখন কোন পথে চলেন, সেটা জানতে চান কংগ্রেস নেতা-কর্মীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন