কন্যাশ্রী নতুন নয়, খোঁচা মেনকার

গত জুনে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে গিয়ে ওই পুরস্কার নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই ঠিক হয় জুলাই মাসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কন্যাশ্রীদের নিয়ে এই জয় পালন করবেন মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

মমতাকে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী মেনকা গাঁধী।

গত মাসেই জন পরিষেবায় রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রথম পুরস্কার পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ কন্যাশ্রী প্রকল্প। সেই প্রকল্প ঘিরে উদ্‌যাপনের দিনেই কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী মেনকা গাঁধী। সংসদে দাঁড়িয়ে মেনকা আজ দাবি করেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পের মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। বহু রাজ্যেই এমন প্রকল্প চালু রয়েছে।

Advertisement

গত জুনে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে গিয়ে ওই পুরস্কার নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই ঠিক হয় জুলাই মাসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কন্যাশ্রীদের নিয়ে এই জয় পালন করবেন মমতা। আজ ছিল সেই দিন। অনুষ্ঠান হয় রাজ্যের বিভিন্ন অংশেও। দলের নির্দেশে এ দিন সংসদে এ বিষয়ে বলার নির্দেশ দেওয়া হয় পুরুলিয়ার তৃণমূল সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতোকে। কী ভাবে কত দেশের মধ্যে হওয়া প্রতিযোগিতায় কন্যাশ্রী ওই পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছে, সংসদে বিস্তারিত তা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ওই প্রকল্পকে মডেল করে সব রাজ্যে চালু করার দাবি তোলেন মাহাতো।

তৃণমূল সাংসদ কোনও প্রশ্ন না করলেও, স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই জবাব দেন মেনকা। চাঁচাছোলা ভাষায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যে প্রকল্পটি চলছে, ঠিক সেই ধাঁচের প্রকল্প মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, মহারাষ্ট্র কর্নাটকের মতো একাধিক রাজ্যেও ততটাই সফল ভাবে চালু রয়েছে।’’ শাসক শিবিরের বক্তব্য, গোটা দেশে প্রথম এই ধরনের প্রকল্প চালু করে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহের সরকার। সেই প্রকল্পের নাম লাডলি লক্ষ্মী যোজনা। পরে ছত্তীসগঢ়েও তা চালু হয়। পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের প্রকল্প শুরু হয়েছে অনেক পরে।

Advertisement

আরও পড়ুন: শেষ লগ্নে নাটক, বাতিল কি বিকাশ

মেনকা অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি। উল্টে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য মমতা সরকার কেন্দ্রের ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পকে অবহেলা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এর ফলে খোদ কলকাতায় নারী-পুরুষে বৈষম্য বাড়ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। মেনকার কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে যে ১১০টি জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে কলকাতার স্থান এখন একেবারে নিচের দিকে। কলকাতায় ২০১৪ সালে প্রতি হাজার বালকের অনুপাতে ১০২২ জন বালিকা ছিল। এখন তা নেমে এসেছে ৮৯৮-এ।’’

মেনকার অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে রূপায়ণে গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘এটা কোনও রাজনৈতিক প্রকল্প নয়। মেয়েদের সার্বিক উন্নতির জন্য এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। জানি না, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কেন ওই প্রকল্প গ্রহণ করছেন না।’’

মেনকার যুক্তি মানতে রাজি নয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের যুক্তি, কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পের জন্য মাত্র ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রীর প্রকল্পের বাজেট হল প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। স্বাভাবিক কারণেই কন্যাশ্রী প্রকল্প গুরুত্ব পেয়েছে রাজ্যে। এবং সে কারণে এসেছে সাফল্যও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন