আতঙ্কে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন বাসিন্দারা।
সোমবার ভোররাতে ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়াল উত্তরবঙ্গ জুড়ে। এ দিন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ কম্পন অনুভূত হয়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০ সেকেন্ড ধরে কম্পন রেশ ছিল। এ দিন ভোরের কম্পন শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের মনে গত বছরের আতঙ্কের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। কনকনে ঠান্ডায় ঘরবাড়ি ছেড়ে সব লোকজন রাস্তায় নেমে আসেন। আতঙ্কে বেশ কয়েক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে পড়ে জখম হয়েছেন অনেকে। ১৪ জনকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এঁদের মধ্যে এক জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্য দিকে, শিলিগুড়ির আশ্রম পাড়া, হাকিম পাড়া এলাকায় কম্পনের পরেও বাসিন্দাদের বেশ কিছু ক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। বিশেষত বহুতলের সামনে ভিড় দেখা গিয়েছে। আতঙ্কের জেরে অনেকেই ঘরে থাকতে চাননি। জল্পনা চলতে থাকে আফটার শকের কারণে ফের কম্পন হতে পারে। হাকিম পাড়ার বালিন্দা টুম্পা মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুই মেয়ে ছোট। ঘুম ভেঙে কোনও মতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি। সবাই বলছে আফটার শক হতে পারে, তাই ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছি না।”
এ দিন ভোরে ভূমিকম্পের পরই শঙ্খ-উলুধ্বনি শোনা যায় শিরিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায়।
ভূমিকম্পে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ছবি: এএফপি।
গত বছরের ২৫ এপ্রিল নেপালের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল উত্তরবঙ্গও। বাড়ি হেলে যাওয়া, পাঁচিল ভেঙে পড়া থেকে শুরু করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল শিলিগুড়ি সংলগ্ন এলাকায়। মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। সেই কম্পনের আফটার শক চলেছিল সপ্তাহখানেক ধরে। ঘন ঘন কম্পনের জেরে আতঙ্কে বাসিন্দাদের একাংশ বাড়িতে না থেকে খোলা আকাশের নীচে জড়ো হয়েছিলেন। সোমবার ভোরের কম্পন সেই আতঙ্ক ফিরিয়ে এনেছে শিলিগুড়িতে।
এই কম্পনের জেরে রেললাইনে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় ইসলামপুর, মালদহ ও এনজেপি-সহ বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। লাইন পরীক্ষার পর ফের ট্রেন চলাচর শুরু হয়।
ভূমিকম্পের সময় শিলিগুড়ির একটি হোটেলে ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেন, “হোটেলের ঘরগুলি প্রচণ্ড রকম কেঁপে উঠেছিল। আশা করি সকলেই সুরক্ষিত আছেন।”
এই সংক্রান্ত আরও খবর...
• ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য, রিখটার স্কেলে মাত্রা ৬.৮
• পায়ের নীচের কংক্রিটের মেঝেতে তুমুল ঢেউ খেলে গেল
• ঘুম ভেঙে গেল প্রচণ্ড দুলুনিতে