নাট্য অ্যাকাডেমি ছাড়লেন মনোজ

তিনি জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তাঁর এই পদত্যাগ। তবে নাট্য জগৎ এবং রাজনৈতিক মহল বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৭
Share:

মনোজ মিত্র। —ফাইল চিত্র।

নাট্য অ্যাকাডেমিতে রদবদলের এক সপ্তাহও কাটল না, শুক্রবার ইস্তফা দিলেন খোদ সভাপতি মনোজ মিত্র। যদিও তিনি জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তাঁর এই পদত্যাগ। তবে নাট্য জগৎ এবং রাজনৈতিক মহল বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে।

Advertisement

গত ১২ অগস্ট নাট্য অ্যাকাডেমির সদস্য পদ থেকে ‘আচমকা’ই সরিয়ে দেওয়া হয় প্রবীণ নাট্য ব্যক্তিত্ব অরুণ মুখোপাধ্যায়, হরিমাধব মুখোপাধ্যায়, ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়দের। যা নিয়ে নাট্য জগতে ‘জলঘোলা’ও শুরু হয়। মনোজবাবু জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। এ দিন তিনি সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, বিতর্ক থেকে সরে দাঁড়াতেই কি তা হলে পদত্যাগ করলেন তিনি? কেউ কেউ আবার বলছেন, নাট্য অ্যাকাডেমিতে নতুন প্রজন্মকে তুলে আনা হচ্ছে। সেই ‘জেনারেশন গ্যাপ’ও মনোজবাবুর সরে দাঁড়ানোর একটি কারণ হতে পারে।

এ দিন মনোজবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের প্রধান সচিবকে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছি। গত বছর পুজোর সময় থেকে আমি অসুস্থ। বাড়ি থেকে বেরতেই পারি না। সে কারণেই ইস্তফা দিলাম।’’

Advertisement

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও তৃণমূলের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘‘কিছু দিন আগে মনোজদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কথা বলছিলেন। তবে এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’’ আর এক নাট্য ব্যক্তিত্ব তথা তৃণমূলনেত্রী অর্পিতা ঘোষ আগের মতোই এ দিনও জানিয়েছেন, রাজনীতির কাজে তিনি ইদানীং কলকাতায় থাকতেই পারেন না। নাট্য অ্যাকাডেমির খবরও রাখেন না। ফলে মনোজবাবুর পদত্যাগ বিষয়েও তাঁর কিছু জানা নেই।

মনোজবাবুর পদত্যাপত্র গৃহীত হয়েছে কি না, তা জানতে তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান সচিব বিবেক কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

নাট্য জগতে অবশ্য ইতিমধ্যেই পরবর্তী সভাপতির নাম নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, তা হলে কি ফের সভাপতি হিসেবে ফিরিয়ে আনা হবে ব্রাত্য বসুকে? পাশাপাশি অর্পিতা ঘোষ, মেঘনাদ ভট্টাচার্যদের মতো নাট্য বক্তিত্বদের নাম নিয়েও চর্চা হচ্ছে।

এ দিকে সাংস্কৃতিক জগতের এই ‘রাজনীতি’তে এ দিন ঢুকে পড়েছে কংগ্রেস-সিপিএমও। কংগ্রেসের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মনোজবাবুর পদত্যাগ, তার আগে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কমিটি থেকে অপর্ণা সেনদের সরে দাঁড়ানো— এই সব কিছু দেখে তাদের ধারণা, রাজ্য সরকার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের ‘সম্মান’ দিচ্ছে না।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘গোড়া থেকেই এই সরকার শিল্পীদের সঙ্গে ‘লেনাদেনা’র সম্পর্ক নিয়ে চলেছে। ফলে শিল্পীর স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে বার বার। শিল্পীরা যে ভাবে একের পর এক কমিটি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে, শিল্পী-মন আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement