করোনা-হাসপাতালে মৃতের অন্ত্যেষ্টি নিয়ে ধুন্ধুমার, পুলিশ লুকোল জঙ্গলে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দিন কয়েক আগেই আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের তপসিখাতায় ইন্টিগ্রেটেড আয়ুষ হাসপাতালকে করোনার সারি হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০১:০২
Share:

গ্রামবাসীরা কয়েকটি পুলিশের গাড়ি এবং একটি মাটি কাটার যন্ত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। 

করোনার সারি (সারভাইলেন্স ফর সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) হাসপাতালে এক বৃদ্ধের মৃত্যু এবং তাঁর শেষকৃত্য ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল আলিপুরদুয়ারের শালকুমার এলাকার প্রধানপাড়া।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার রাতের এই ঘটনায় ২২ জন পুলিশ জখম হন। তাঁদের মধ্যে মাদারিহাট থানা এবং সোনাপুর ফাঁড়ির দুই ওসি রয়েছেন। এক সাব ইনস্পেক্টরের আঘাত গুরুতর। তাঁকে সোমবার শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রামবাসীরা কয়েকটি পুলিশের গাড়ি এবং একটি মাটি কাটার যন্ত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন বলেও অভিযোগ।

পুলিশের গুলিতে এক স্থানীয় যুবক জখম হন বলে অভিযোগ। পুলিশেরই একটি সূত্রের দাবি, ১০ জন পুলিশ প্রাণ বাঁচাতে সংলগ্ন জলদাপাড়া জঙ্গলে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। সকালে বনকর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: পড়ুয়ার বাড়িতেও যাবে চাল ও আলু

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দিন কয়েক আগেই আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের তপসিখাতায় ইন্টিগ্রেটেড আয়ুষ হাসপাতালকে করোনার সারি হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করা হয়। সূত্রের খবর, ওই হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু হলে ওই ব্লকেরই শালকুমার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তোর্সার চরে তাঁর শেষকৃত্যের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।

এই বিষয়ে আপত্তি ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বাবুল কারজির অভিযোগ, “প্রথম দিকে বিষয়টিতে আমাদেরও অন্ধকারে রাখা হয়েছিল।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এরই মধ্যে রবিবার দুপুরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক বৃদ্ধ ভর্তি হন ওই হাসপাতালে। বিকেলে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ হলেও পরীক্ষা করতে পাঠানোর আগে সন্ধ্যাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

আরও পড়ুন: হাওড়ায় হোম ডেলিভারির আওতায় প্রায় ১ লক্ষ মানুষ

রবিবার রাত ন’টা নাগাদ বৃদ্ধের শেষকৃত্যের জন্য সোনাপুর ফাঁড়ি ও আলিপুরদুয়ার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মাটি কাটার যন্ত্র নিয়ে প্রধানপাড়ায় তোর্সার চরের কাছে পৌঁছয়। তত ক্ষণে সেখানে জড়ো হয়ে গিয়েছেন কয়েকশো মানুষ। গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘‘গাড়ি থেকে নামতেই জনতা আমাদের ঘিরে মারধর ও পাথর ছুড়তে শুরু করে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, অন্যদের সঙ্গে জখম হন মাদারিহাট থানার ওসি টিএন লামা এবং সোনাপুর ফাঁড়ির ওসি তাপস হোড়ও। পুলিশের গুলিতে সাহারুক আলম নামে এক যুবক জখম হন বলে অভিযোগ। তিনি হাসপাতালে ভর্তি।

আলিপুরদুয়ারের এসপি অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘পুলিশের গুলি চালানোর অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, রাতে অন্যত্র বৃদ্ধের শেষকৃত্য করা হয়।


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন