Madhyamik Examination 2024

টাকা নেই! টেস্ট পেপার পড়ে ডিআই অফিসে

মাধ্যমিক শুরু ২ ফেব্রুয়ারি। এখনও যদি পড়ুয়ারা হাতে টেস্ট পেপার না-পায়, তা হলে তা ছেপে কী লাভ হল, কার লাভ হল, সেই অমোঘ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শিক্ষকেরা।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভাঁড়ে মা ভবানী।

Advertisement

এতটাই খারাপ অবস্থা, গাড়ি ভাড়া করে বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস থেকে তারা যে টেস্ট পেপার নিয়ে আসবে, এমন সামর্থও নেই জেলার বেশিরভাগ স্কুলের। ফলে পরিদর্শকের অফিসে ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে এ বারের মাধ্যমিকের টেস্ট পেপার।

মাধ্যমিক শুরু ২ ফেব্রুয়ারি। এখনও যদি পড়ুয়ারা হাতে টেস্ট পেপার না-পায়, তা হলে তা ছেপে কী লাভ হল, কার লাভ হল, সেই অমোঘ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শিক্ষকেরা।

Advertisement

নিয়ম অনুযায়ী, টেস্ট পেপার ছেপে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই) ও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (এআই)-এর অফিসে পৌঁছয়। সেখান থেকে টেস্ট পেপার নিয়ে আসে জেলার স্কুলগুলো। ভয়ঙ্কর অনটনের মধ্যেও এত দিন গাড়ি ভাড়া করে তারা টেস্ট পেপার স্কুলে নিয়ে এসেছে। কিন্তু, এ বার বেঁকে বসেছে বহু স্কুল। অন্য দিকে, পরিদর্শকদের অফিসও জানিয়েছে যে তাঁদের পক্ষে স্কুলে স্কুলে টেস্ট পেপার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়।

এই জাঁতাকলে পড়ে টেস্ট পেপার হাতে পায়নি বহু পরীক্ষার্থী। টেস্ট পেপার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘টেস্ট পেপার ডিআই অফিসে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’’ দক্ষিণবঙ্গের এক ডিআই বলেন, ‘‘আমাদের পক্ষে গাড়ি ভাড়া খরচ করে টেস্ট পেপার এআই অফিস বা স্কুলে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। এই দায়িত্ব স্কুলকে নিতে হবে। একটি স্কুলের একার পক্ষে গাড়ি ভাড়া করা সম্ভব না-হলে, অনেকগুলো স্কুল একসঙ্গে গাড়ি ভাড়া করতে পারে।’’

স্কুলের দাবি, আশপাশে স্কুল না-থাকলে, সেটা করা সম্ভব নয়। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির কথায়, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু স্কুল প্রত্যন্ত এলাকায়। তাদের পক্ষে গাড়ি ভাড়া করে টেস্ট পেপার আনা সম্ভব নয়। স্কুলগুলোর আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। বিদ্যুতের বিল দিতে গিয়ে নাভিশ্বাস অবস্থা।’’ অভিযোগ, স্কুলের ফি বছরে ২৪০ টাকা। ‘কম্পোজ়িট গ্রান্ট’ বাবদ যে টাকা পাওয়া যায় তাও পর্যাপ্ত নয়।

চন্দনের প্রশ্ন, ‘‘পর্ষদের পক্ষ থেকে টেস্ট পেপার কেন স্কুলে পৌঁছে দেওয়া হবে না?’’ পর্ষদের এক কর্তার দাবি, ‘‘টেস্ট পেপার বেরোনোর পরে বর্ষশেষের টানা ছুটির ফলে জেলায় পৌঁছতে অসুবিধা হয়েছে। বহু স্কুল তো টেস্ট পেপার সংগ্রহ করে তা পড়ুয়াদের বিনামূল্যে দিয়েও দিয়েছে।’’

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘স্কুলে যখন টেস্ট পেপার এসে পৌঁছবে, তখন পরীক্ষা এতই কাছে চলে আসবে যে পড়ুয়ারা আর স্কুল থেকে সংগ্রহ করতে উৎসাহ হারাবে। স্কুলেই পড়ে নষ্ট হবে টেস্ট পেপার। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে টেস্ট পেপার প্রকাশ করে কার লাভ হচ্ছে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন