কর্মরত অবস্থায় মৃত বাবা-মায়ের বিবাহিত কন্যাকেও চাকরি, রায় দিল হাইকোর্ট

পঞ্চায়েত এবং রাজ্যের শ্রম দফতরের নির্দেশিকায় কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ড বা সহানুভূতিজনিত কারণে চাকরির ক্ষেত্রে বিবাহিত মহিলারা গণ্য হতো না। বুধবার সেই নির্দেশিকা খারিজ করে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

এত দিন অবধি এ রাজ্যের কোনও সরকারি কর্মী কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে তাঁর ছেলে বা অবিবাহিত মেয়ে চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন। এ বার থেকে বিবাহিত মহিলারাও ওই ধরনের চাকরি পাওয়ার অধিকারী হবেন বলে রায় দিল কলকাতা হাইকোর্টে।

Advertisement

পঞ্চায়েত এবং রাজ্যের শ্রম দফতরের নির্দেশিকায় কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ড বা সহানুভূতিজনিত কারণে চাকরির ক্ষেত্রে বিবাহিত মহিলারা গণ্য হতো না। বুধবার সেই নির্দেশিকা খারিজ করে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

এ দিন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, সহানুভূতিজনিত চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও
মহিলা ‘বিবাহিত’ না অবিবাহিত’ তা দেখলে চলবে না। সেটা সংবিধান-বিরোধী।

Advertisement

পরে আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, তাঁর মক্কেল পূর্ণিমা দাসের বাবা হারু দাস বীরভূমের নলহাটি এলাকার পারা-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। ২০১১ সালে কর্মরত অবস্থায় তিনি মারা যান। পূর্ণিমার মা পঞ্চায়েত দফতরের কাছে ২০১২ সালে আবেদন জানিয়ে বলেন, তাঁর ছোট মেয়েকে (পূর্ণিমা) চাকরিটি দেওয়া হোক। মনোরমা ও নীলিমা নামে সরস্বতীদেবীর অন্য দুই মেয়ে জানিয়ে দেন, বোনের চাকরি হলে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু পঞ্চায়েত দফতর সরস্বতীদেবীর আবেদন বিবেচনা করেনি। ওই বছরই হাইকোর্টে মামলা করেন পূর্ণিমা। সেই সময় তাঁর বিয়ে হয়ে যায়।

আইনজীবী জানান, বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর পঞ্চায়েত দফতরকে নির্দেশ দেন, ওই মহিলার আবেদন বিবেচনা করে দেখতে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর ২০০৯ সালের একটি ‘মেমো’ আদালতে পেশ করে বলে, বিবাহিত মহিলাকে সহানুভূতিজনিত চাকরি দেওয়ার নিয়ম নেই। সেই মেমো-কে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে ফের মামলা করেন পূর্ণিমা। সেই মামলার একাধিক শুনানি হয় বিচারপতি নিশীথা মাত্রে, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে। সরকারি কৌঁসুলি জয়তোষ মজুমদার আদালতে জানান, ওই ধরনের চাকরি পেতে পারেন অবিবাহিত মহিলারাই। এ দিনের রায়ে সেই নিয়মই বাতিল হল।

আইনজীবী অঞ্জনবাবু জানান, পূর্ণিমাকে আট সপ্তাহের মধ্যে চাকরি দিতে বলেছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন