বন্দর কর-রহস্য এড়ালেন মেয়র

পুর বোর্ডের আগেকার অবস্থান থেকে সরে গিয়ে তিনি আশ্বাস দেন, ‘‘পুরসভার স্বার্থ যাতে বজায় থাকে, সেই চেষ্টা করব। বকেয়া পুরো টাকাই সংগ্রহ করব।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০৪:২১
Share:

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৪২২ কোটি টাকার সম্পত্তিকর বকেয়া থাকলেও কেন তা এক কোটি টাকায় মেটানোর চেষ্টা হয়েছিল, সেটা রহস্যই রয়ে গেল। কেননা বুধবার পুর অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও প্রশ্নের জবাব কার্যত এড়িয়ে যান মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুর বোর্ডের আগেকার অবস্থান থেকে সরে গিয়ে তিনি আশ্বাস দেন, ‘‘পুরসভার স্বার্থ যাতে বজায় থাকে, সেই চেষ্টা করব। বকেয়া পুরো টাকাই সংগ্রহ করব।’’

Advertisement

বন্দরের বকেয়া সম্পত্তিকরের বিষয়টি মাত্র এক কোটি টাকায় ফয়সালা করার উদ্যোগকে ঘিরে সম্প্রতি পুরভবনে ব্যাপক শোরগোল হয়। অভিযোগ, কলকাতা পুরসভা এলাকায় থাকা নিজেদের জমিতে লিজ-ভাড়া আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার সম্পত্তিকরও তুলে নেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। অথচ পুরসভার কোষাগারে তা জমা দেননি। ২০১৪-’১৫ সালে বন্দরের অডিট করতে গিয়ে বিষয়টি কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর রেসিডেন্ট অডিট শাখার চোখে পড়ে। সিএজি তা জানায় পুর প্রশাসনকে।

তার পরেই পুরসভা বকেয়া টাকা চেয়ে চিঠি দেয় বন্দরকে। ২০১৩-’১৪ সালের পর থেকে বকেয়া কর বাবদ ৬০ কোটি টাকা দিয়েছে বন্দর। কিন্তু তার আগের হিসেব না-থাকায় সেটা বকেয়াই থেকে যায়। গত জানুয়ারিতে মহাকরণে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর, পুরসভার সঙ্গে বন্দর-কর্তৃপক্ষের এক বৈঠক হয়। মহাকরণ সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে পুর বোর্ডের এক কর্তা ২০১৩ সালের আগের সব হিসেব মাত্র এক কোটি টাকায় মিটিয়ে দেওয়ার কথা মৌখিক ভাবে জানান। সেই অনুযায়ী বন্দরের প্রতিনিধি গত ফেব্রুয়ারিতে এক কোটি টাকার ড্রাফট নিয়ে পুরসভায় যান। কিন্তু পুরসভার পদস্থ আধিকারিকেরা তা নিতে অস্বীকার করেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, আয়কর দফতর থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, বকেয়া আছে প্রায় ৪২২ কোটি টাকা। তাই এক কোটি টাকায় ফয়সালা করা যাবে না।

Advertisement

বন্দর-কর্তৃপক্ষ তাতেও অবশ্য দমেননি। তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যান। বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান বালাজি অরুণকুমার তখন জানান, পুর বোর্ডের মৌখিক সায় পেয়েই এক কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল।
তবে পুর অফিসারদের আপত্তিতে সব কিছু আটকে যায়। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, এই বিষয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে।

এ দিনের পুর অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ও প্রস্তাব তোলেন কংগ্রেসের প্রকাশ উপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কেন ৪২২ কোটি টাকার বকেয়া এক কোটিতে ফয়সালার করার চেষ্টা হয়েছিল, তা জানানো হোক। এবং অবিলম্বে বকেয়া টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করা হোক।’’

তার পরেই মেয়র প্রতিশ্রুতি দেন, পুরো টাকা আদায় করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন