রোগী পেলেন নতুন হৃৎপিণ্ড। আর আত্মবিশ্বাস পেল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
রোগীর ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার পরে নিকটাত্মীয়দের অনুমতি নিয়ে তাঁর হৃৎপিণ্ড তুলে যাতে অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়, মেডিক্যালের কার্ডিয়োথোরাসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা সাত-আট মাস ধরে তার প্রস্তুতি চালিয়েছেন। নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে তামিলনাড়ুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপনের প্রশিক্ষণ নেন। তাতেই রাজ্যের প্রথম সরকারি হাসপাতাল হিসেবে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনে সাফল্য পেয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল।
সৈকত লাট্টু নামে বজবজের এক যুবকের হৃৎপিণ্ড শনিবার বসানো হয় রাখাল দাস নামে এক যুবকের দেহে। মেডিক্যালের খবর, রাখালের অবস্থা স্থিতিশীল। সংক্রমণ এড়াতে তাঁকে পৃথক আইটিইউয়ে রাখা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর রক্তচাপ ছিল ১১৫/৭০। নাড়ির গতি ১১০। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ১০০%।
অস্ত্রোপচারকারী দল ও কার্ডিয়োথোরাসিক বিভাগের প্রধান প্লাবন মুখোপাধ্যায় জানান, ৪৮ ঘণ্টা না-কাটলে কিছু বলা ঠিক নয়। তবে রোগীর যা অবস্থা বা ‘রিকোভারি রেট’ যা, তাতে প্রাথমিক ভাবে বলা যায়, অস্ত্রোপচার সফল। অল্প কথাও বলেছেন রোগী। অস্ত্রোপচারের জন্য রাজ্যেরই সাত জন সার্জন, দু’জন অ্যানেস্থেটিস্ট, তিন জন পারফিউশন স্পেশ্যালিস্টকে নিয়ে বিশেষ দল গড়া হয়েছিল মেডিক্যালে। ‘‘আমরা চাইনি, দক্ষিণ বা উত্তরের রাজ্যের বিশেষজ্ঞেরা এসে অস্ত্রোপচার করুন। আমরা স্বনির্ভর ও আত্মবিশ্বাসী হতে চেয়েছিলাম,’’ বলেন প্লাবনবাবু।
মেডিক্যালে অভিনন্দনের স্রোত। ‘‘সরকারি হাসপাতালও যে পারে, সেটা দেখানোর ছিল। এখানে এখন নিখরচায় হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপন করাও সম্ভব,’’ বললেন প্লাবনবাবু।