দলীয় কার্যালয় থেকে জল দীপকের বাড়িতে

সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বাড়ি জলের সংযোগ কেটে দেওয়া ঘিরে মেদিনীপুরে শোরগোল চলছেই। তবে সুর কিছুটা নরম করেছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা সূত্রে খবর, জলের সংযোগ ফিরে পেতে চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন দীপকবাবুর স্ত্রী সুনন্দা সরকার। পুর-কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০১:১৭
Share:

মঙ্গলবারও নির্জলা ছিল বিধাননগরে সিপিএম নেতার এই বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বাড়ি জলের সংযোগ কেটে দেওয়া ঘিরে মেদিনীপুরে শোরগোল চলছেই। তবে সুর কিছুটা নরম করেছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা সূত্রে খবর, জলের সংযোগ ফিরে পেতে চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন দীপকবাবুর স্ত্রী সুনন্দা সরকার। পুর-কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “লিখিত আবেদনপত্র পেয়েছি। বিষয়টি পুর-পারিষদকে (জল) জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ এক পুর-কর্তার কথায়, “লাইন অবৈধ ছিল বলেই কাটা হয়েছে। বৈধ ভাবে কেউ যদি সংযোগ পেতে চান, পাবেন।’
দীপকবাবুর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বিধাননগরে। সোমবার সকালে পুর-কর্মীদের নিয়ে সিপিএম নেতার বাড়ির সামনে গিয়েছিলেন পুর-পারিষদ (জল) মৌ রায়। মৌদেবীর নির্দেশেই জলের লাইন কেটে দেওয়া হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর মৌদেবী জানিয়েছিলেন, এলাকার মানুষ দাবিপত্রে জানিয়েছিলেন, বাড়িতে পর্যাপ্ত জল যাচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়েই জানা যায়, দীপকবাবুর বাড়িতে জলের একটি সরাসরি সংযোগ রয়েছে। ফলে প্রচুর পরিমাণ জল ওই বাড়িতে চলে যাচ্ছে। এরপরই জলের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু দীপকবাবু অভিযোগ তোলেন, কোনও নোটিস না দিয়ে, এমনকী মৌখিক ভাবেও না জানিয়ে জলের সংযোগ ছিন্ন করা বেআইনি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই তৃণমূলের পরিসভা এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপকবাবু।

Advertisement

মঙ্গলবারও সারা দিন নির্জলা ছিল দীপকবাবুর বাড়ি। সোমবার সন্ধ্যায় দলের এক অফিস থেকে জল পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল-বিকেল শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে জল আনা হয়। দীপকবাবুই স্পোটর্স কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান। সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর সর্বভারতীয় কার্যকরী কমিটির সভায় যোগ দিতে এ দিন বিকেলে ট্রেনে চেন্নাই রওনা দেন দীপকবাবু। তার আগে প্রবীণ এই সিপিএম নেতা বলেন, “বাড়িতে কুয়ো রয়েছে। কিন্তু কুয়োর জল তো আর খাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়েই বাইরে থেকে জল আনতে হয়েছে।’’

মঙ্গলবার সকালে দীপকবাবুর বাড়ি যান শহরের সিপিএম কাউন্সিলর জয়ন্ত মজুমদার। পুর-পারিষদ (জল) মৌদেবীর সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। পরে দীপকবাবুর স্ত্রী সুনন্দাদেবী পুরসভায় লিখিত আবেদন করেন। তিনি জানান, কী কারণে তাঁর বাড়ির জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, তা জানা নেই। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ফলে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষ যাতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেন, সেই আর্জিও জানান সুনন্দাদেবী। এরপরই পুরভবনে ব্যস্ততা শুরু হয়। দীপকবাবুর বাড়িতে এক না একাধিক জলের সংযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়। হোল্ডিং নম্বর ধরে এই খোঁজ চলে। যদিও এ দিন খাতাপত্র নাড়াচাড়া করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি পুর-কর্তৃপক্ষ। পুর-পারিষদ (জল) মৌদেবীর কথায়, “হোল্ডিং নম্বর দেখে খোঁজ চলছে। জলের সংযোগের ব্যাপারটি দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

পুরসভার এক সূত্রে জানানো হয়েছে, যে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, সম্ভবত এখনই সেটি জোড়া লাগানো হবে না। অন্য কোনও বৈধ সংযোগ দীর্ঘদিন অচল হয়ে পড়ে থাকলে, সেটি মেরামত করা হবে।যদি দেখা যায়, দ্বিতীয় কোনও সংযোগ নেই, তখন ওই বাড়িতে জলের নতুন সংযোগ দেওয়া হবে। সেই ক্ষেত্রে সুনন্দাদেবী কিংবা পরিবারের অন্য কোনও সদস্যকে পুরসভায় লিখিত আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় ফি জমা দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন