ও-পারে শুধরে যাওয়া রনিই এ-পারে ডাকাত

তদন্তকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ উপকূল দাপিয়েছে জলদস্যুদের তিনটি গোষ্ঠী। তিন গোষ্ঠীর মাথা ছিল মজনু শেখ, আতিয়ার রহমান এবং ইলিয়াস শেখ। রনি ছিল মজনু গোষ্ঠীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১২
Share:

ধৃত রনি।

সীমান্তের ও-পারে সে অপরাধ জগৎ থেকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসা ‘সাধারণ’ মানুষ। আর এ-পারে সে-ই কিনা ডাকাত দলের সর্দার!

Advertisement

বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নথি বলছে, বছর দুয়েক আগে যে সব জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম ওরফে রনি শেখ। সোমবার সেই রনি-সহ তিন জনকে ডাকাতির অভিযোগে ক্যানিঙের ছোট দুমকি এলাকা থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

বারুইপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে নিজের দলবল নিয়ে ঢুকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির দুর্গাপুর এলাকায় ঘাঁটি গাড়ে রনি। কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় একাধিক ডাকাতির ঘটনায় সে জড়িত। এ দেশে সে একটি বিয়ে করেছে। মামাশ্বশুরকে ‘বাবা’ পরিচয় দিয়ে নিজের নামে তৈরি করে ফেলেছে আধার কার্ড। কাগজ-কলমে সে এখন এ দেশের নাগরিক। পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। নানা তথ্য মিলছে। রনির বাকি শাগরেদদের খোঁজ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:গোরক্ষপুর ঠেকাতে ভাঁড়ার মেলাচ্ছে রাজ্য

তদন্তকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ উপকূল দাপিয়েছে জলদস্যুদের তিনটি গোষ্ঠী। তিন গোষ্ঠীর মাথা ছিল মজনু শেখ, আতিয়ার রহমান এবং ইলিয়াস শেখ। রনি ছিল মজনু গোষ্ঠীর। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের কাছে তিন গোষ্ঠীর বহু জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে। তার মধ্যে ছিল রনি। অপরাধ ছেড়ে মূলস্রোতে ফিরে আসার জন্য বাংলাদশ সরকার আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের বছরে এক লক্ষ টাকা অনুদানও দিচ্ছে। এক তদন্তকারী মনে করছেন, রনির মতো আত্মসমর্পণকারী বহু দুষ্কৃতী এখন এ পারে ঘাঁটি গেড়েছে। এক দিকে তারা বাংলাদেশ থেকে অনুদান নিচ্ছে, আর এ পারে ডাকাতি-ছিনতাই করছে।

পুলিশ জানায়, রনি ক্যানিং বাসন্তী, গোসাবা এলাকায় পর্যটকদের লুঠপাটের ছক কষেছিল। সম্প্রতি রাজু প্রামাণিক ওরফে মাইলো নামে ক্যানিঙের এক দুষ্কৃতীর কাছে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার জন্য সে হাজির হয়। তাদের কথা জানতে পারার পরেই রনি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিনই ধৃতদের আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন