কোচবিহারে ছিটমহল নিয়ে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
ছিটমহলবাসীর পুনর্বাসনে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করে জেলা প্রশাসনকে তা দ্রুত রূপায়ণের নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার ছিটমহল নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কোচবিহারে তিনটি বৈঠক করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে পুনর্বাসনের পাশাপাশি ছিটমহলবাসীদের নিরাপত্তার দিক নিয়েও আলোচনা হয়।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, মাথাভাঙা শীতলকুচির বিধায়ক হিতেন বর্মণ, কোচবিহারের জেলাশাসক পি উলগানাথন, জেলার পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব, ডিজি (কোস্টাল) রাজ কানোরিয়া, জলপাইগুড়ি বেঞ্চের ডিভিশনাল কমিশনার বরুণ রায়-সহ জেলার উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির পর আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দু’দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হবে। দু’দেশ মিলিয়ে মোট ১৬২টি ছিটমহলের মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল এবং এ দেশে রয়েছে ৫১টি বাংলাদেশি ছিটমহল। ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী, ভারতীয় ছিটমহলে বসবাসকারীর সংখ্যা ৩৭ হাজার। বিনিময় হলে বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় ছিটমহলের মানুষেরা এ দেশে আসবেন। এদের পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন।
এ দিনের বৈঠকে ছিটমহলবাসীর পুনর্বাসনের জন্য পুরনো পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। নতুন পরিকল্পনা তৈরি করে তার উপর দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। পুনর্বাসনের জন্য কোচবিহার, দিনহাটা এবং মাথাভাঙার মেখলিগঞ্জে জমি বাছাই করা হয়েছে। সেখানে যে বাসস্থান তৈরি করা হবে তাতে রান্নাঘর, শৌচালয়, বাচ্চাদের খেলার জায়গা-সহ নর্দমা বা পানীয় জলের মতো অতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যাতে থাকে সে দিকেও নজর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, আগামী ৬ থেকে ১৬ জুলাই ছিটমহলে জনগণনার কাজও সম্পন্ন হবে। এ বিষয়ে চলতি সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলেও বৈঠকে জানানো হয়েছে।
পুনর্বাসন ছাড়াও বৈঠকে ছিটমহলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ইতিমধ্যেই সেখানে ৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের কথা হয়েছে। নজরদারির জন্য পুলিশি টহলদারিও শুরু হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রসচিবকে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে বাসুদেববাবু বলেন, “ছিটমহল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ দিন তিনটি বৈঠক করেছি। এখানকার জনপ্রতিনিধিদের কথাও শুনেছি। এ বিষয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে।”