রনো ছবি হাতে তৃষ্ণাদেবী। নিজস্ব চিত্র।
সালটা ১৯৩১। স্বাধীনতা সংগ্রামের ঢেউ সারা দেশ জুড়ে। পিছিয়ে ছিলেন না কাটোয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও। সেই সময়ে কাটোয়ায় বিপ্লবীদের উদ্বুদ্ধ করতে এসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। এখনকার নেতাজি সুভাষ আশ্রমের দোতলায় তিন দিন ছিলেন তিনি। একাধিক বৈঠক করে বিপ্লবীদের উদ্বুব্ধও করেছিলেন। ২৩ জানুয়ারির আগে সেই স্মৃতিই মনে পড়ছে কাটোয়ার আর এক বিপ্লবী শ্যামরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের।
সেই সময়ে কাটোয়ার বিপ্লবীদের অন্যতম ছিলেন শ্যামরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র শ্যামরঞ্জনবাবু আন্দোলনের সূত্রে সুভাষচন্দ্র বসুর সংস্পর্শে আসেন। পরে ১৯২৮ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় কংগ্রেসের ৪৩তম অধিবেশনে তিনি যোগ দেন বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স কর্পসে। শ্যামরঞ্জনবাবুর পুত্রবধূ তৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি নিজে যেমন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শ মেনে চলতেন, তেমনই সবাইকে মেনে চলার পরামর্শ দিতেন। কী ভাবে তিনি নেতাজির সংস্পর্শে এলেন, সেই গল্প বলতেন সবাইকে। নেতাজির সাথে শ্যামরঞ্জনবাবুর একাধিক ছবি রয়েছে তাঁদের বাড়িতে। সেই ছবিগুলি নিয়েই ২৩ জানুয়ারির দিনটা তাঁরা বাড়িতে কাটান বলে জানান তৃষ্ণাদেবী। শ্যামরঞ্জনবাবুর পৌত্র সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, কাটোয়ায় যখন সুভাষচন্দ্র বসু এসেছিলেন, সেই সময়ে তাঁর দাদু ছিলেন নেতাজির সর্বক্ষনের সঙ্গী। কিন্তু সংরক্ষনের অভাবে নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি প্রায় ভেঙে পড়ার মুখ বলে দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি।
নেতাজি সুভাষ আশ্রমের দায়িত্বে রয়েছে ১১ জনের একটি ট্রাস্ট। সেই ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই বাড়িটি ঘিরে কিছু আইনি জটিলতা ছিল। সেই কারনে সংস্কার হয়নি। যদিও বাড়িটিতে সুভাষচন্দ্র বসুর সম্পর্কিত কোনও জিনিস নেই, কিন্তু তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি সংরক্ষনের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কিত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশের কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই প্রসঙ্গে সুদীপ্তবাবু জানান, সবার মতো তাঁরাও আগ্রহী নেতাজির সম্পর্কে নতুন তথ্য জানান ব্যাপারে।