ধান কেনায় পনেরো দিন ফড়ে-ধর্মঘট

বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির সভায় এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

সরকারি ধান সংগ্রহের মরসুমে খোলা বাজারে ধানের কারবারিদের উপরে পুলিশ চড়াও হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে আগামী ১৫ দিন ধান কেনাবেচা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের ধান ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ফড়েরা। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির সভায় এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।

Advertisement

সমিতির সম্পাদক পশুপতি প্রামাণিক বলেন, ‘‘ধান ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা মামলা দায়ের করছে পুলিশ। বাঁকু়ড়া, পুরুলিয়া, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বেশ কিছু জেলায় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই হয়রানির প্রতিবাদে আমরা আগামী ১৫ দিন কর্মবিরতি পালন করব।’’

তাতে সুবিধা বা অসুবিধা কী হবে? পশুপতিবাবু জানান, সরকার সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনতে চায়। চাষিরা যাতে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে ধান দিয়ে আসতে পারেন, সেই জন্যই ব্যবসায়ী-আড়তদারেরা ধান কিনবেন না। ‘‘আশা করব, সরকার এই ১৫ দিন বিপুল সাড়া পাবে,’’ বলেন সমিতির সম্পাদক।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারে বারেই বলছেন, সরকার ১৭৫০ টাকা কুইন্টাল দরে ধান কিনছে। কিন্তু এক শ্রেণির ফড়ে চাষিদের ঠকিয়ে সেই ধান কম দামে কিনে নিচ্ছেন। তার পরে সরকারি দামে তা বিক্রি করছেন। ফলে লোকসান হচ্ছে চাষিদের। তা রুখতে ফড়েদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই জেলায় জেলায় পুলিশ সক্রিয় হয়েছে। অভিযোগ উঠছে, সক্রিয়তার নামে ধানের কারবারিদের উপরে চড়াও হচ্ছে তারা।

ধানের ব্যবসায়ী-আড়তদারদের বক্তব্য, সরকারি ধান সংগ্রহের পাশাপাশি ধানের খোলা বাজারও রয়েছে। সেখানে কুইন্টাল-প্রতি ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকায় ধান কেনা হচ্ছে। চালকলে সেই ধান বিক্রি হচ্ছে ১৪৯০ টাকা প্রতি কুইন্টালে। খোলা বাজারে চালকল-মালিকেরা প্রতি কুইন্টাল ২১০০ থেকে ২১৫০ টাকায় চাল বিক্রি করছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকারি ধানের দাম ১৭৫০ টাকা। তা ভাঙিয়ে চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কুইন্টাল ২৬৭৫ টাকায়। সরকারি ধান সংগ্রহের মরসুমে পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠায় ধান-চালের খোলা বাজারে বিপর্যয় নেমে এসেছে। তাতে বহু চাষি তাঁদের ধান বিক্রি করতেই পারবেন না।

সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতেই ব্যবসায়ী-আড়তদারেরা টানা ১৫ দিন কারবার বন্ধ রাখতে চলেছেন বলে মনে করছেন চাষিদের একাংশ। চালকল-মালিকদের একাংশ জানান, আড়তদার-ফড়ে-ধান ব্যবসায়ীরা সমান্তরাল ভাবে চাল সংগ্রহ করেন বলেই চালকলগুলিতে ধানের অভাব হয় না। তাই রেশনে চাল দিতে সমস্যাও হয় না। কিন্তু সরকারি সংগ্রহের উপরে নির্ভর করে তা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল।

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘সরকারই ধান কিনবে। ফড়েদের দরকার নেই। ওঁদের কর্মবিরতি নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement