দুর্ঘটনাগ্রস্ত পুলকার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
এক পথচারী ও বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে উল্টে গেল স্কুলের পুলকার। বৃহস্পতিবার দাসপুর থানার গৌরায় ওই দুর্ঘটনায় বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। পুলকারের চালক ও ১১ জন পড়ুয়া জখম হলেও কারও আঘাত গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলকারে স্কুল পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। সেই সঙ্গে উঠেছে পুলিশ-প্রশাসনের সঠিক নজরদারি নিয়েও। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃত বাইক আরোহীর নাম শক্তিপদ মণ্ডল(৪৭)। তিনি স্থানীয় গোবিন্দনগরের বাসিন্দা। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তার তদন্ত হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে দাসপুরের সোনামুইয়ে ওই বেসরকারি স্কুলটি চালু হয়েছে। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। এদিন ১২টা নাগাদ স্কুল ছুটি হলে পুলকারে পড়ুয়াদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল। দুর্ঘটনায় পড়া পুলকারটিতে ১১ জন পড়ুয়া ছিল। নার্সারি ও প্রথম শ্রেণির পড়ুয়ারাই ছিল তাতে। সাড়ে ১২টা নাগাদ গৌরা বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে ওই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গৌরায় ঢোকার পরই পুলকারটি প্রথমে এক পথচারীকে ধাক্কা মারে। তারপর এক বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে রাস্তার ধারে উল্টে যায়। বাচ্চাদের কন্নাকাটি-চিৎকার শুনে ছটে আসেন আশপাশের লোকজন।
তাঁরাই চালক-সহ বাচ্চাদর উদ্ধার করে স্থানীয় এক নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন অভিভাবক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ। পৌঁছে যায় পুলিশও।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলকারের চালক মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তার ফলেই ঘটে দুঘর্টনা। তা ছাড়া ছোট গাড়িতে গাদাগাদি করে ১১ জনকে তোলার জন্য সকলেই কমবেশি জখম হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে চালক মদ্যপ ছিলেন কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণে প্রয়োজনে চালকদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। স্কুলসূত্রে খবর, স্কুলে ১১টি পুলকার রয়েছে। এই গাড়িটি স্থানীয় বারাসত গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। নিয়ম মেনেই পুলকারগুলি চালানো হয় বলে তাঁদের দাবি। স্কুলের অধ্যক্ষ মদন মোহন ঘোড়ুই বলেন, ‘‘ওই গাড়িটিকে আমরা বাতিল করে দিয়েছি। বাকি পুলকার মালিকদের নিয়ে দ্রুত বৈঠকে বসব। এটা স্বস্তির যে পড়ুয়ারা সকলেই সুস্থ রয়েছে।’’