ভাঙা দোলনা, টয় ট্রেন নিয়ে ধুঁকছে তমলুকের দুই পার্ক

তমলুকের শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিমার ঘাট এলাকায় রূপনারায়ণ নদের ধারে বুদ্ধপার্কের এখন এমনই করুণ দশা। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুরসভার উদ্যোগে চালু হয়েছিল এই শিশু উদ্যান।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০০:১৩
Share:

বেহাল: বুদ্ধ পার্কে ভেঙে পড়ে আছে জাম্পিং বার্ড।

ভাঙাচোরা দোলনাগুলোয় আর দাপাদাপি করে না শিশুরা। টয় ট্রেনের ট্র্যাকে নেই কোনও কামরা। লাইনে জং পড়ে গিয়েছে। এক সময়ের সাজানো বাগান এখন ঢেকেছে আগাছা ও জঙ্গলে।

Advertisement

তমলুকের শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিমার ঘাট এলাকায় রূপনারায়ণ নদের ধারে বুদ্ধপার্কের এখন এমনই করুণ দশা। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুরসভার উদ্যোগে চালু হয়েছিল এই শিশু উদ্যান। ছোটদের জন্য দোলনা, ঘোরানো সিঁড়ি, টয় ট্রেন, পাখি ঘর, ফুলের গাছগাছালি ছাড়াও পুকুরে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও ছিল। শহরের খুদে স্কুল পড়ুয়াদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল এই শিশুউদ্যান। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে সেই শিশু উদ্যান এ ভাবেই বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। উদ্যানের একপাশে জলাশয়ের মধ্যে বেদিতে বসানো বুদ্ধমূর্তি বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। উদ্যানের আলোকসজ্জাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শিশু উদ্যানের অন্যতম আকর্ষণ পাখিঘরে হাতে গোটা কয়েকটি পাখি থাকলেও দেখাশোনার অভাবে তাদের অবস্থাও কাহিল। উদ্যানের এদিক ওদিক ছড়িয়ে কাগজের বাক্সের স্তুপ, ভাঙা চেয়ার। উদ্যানের এমন করুণ দশায় কমে গিয়েছে ছোটদের আনাগোনা।

পার্বতীপুরের বাসিন্দা দীপিকা পাড়ুই বলেন, ‘‘৪ বছরের মেয়েকে নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বিকেলে এখানে আসতাম। কিন্তু যা অবস্থা হয়েছে তাতে ছোটরা আর আনন্দ পায় না। নোংরা-আবর্জনার জন্য বাচ্চাদের আর এখানে আনি না। ওদেরও অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু উপায় কী!’’

Advertisement


বরদাকান্ত শিশু উদ্যানে আগাছার মাঝে ভাঙা টয়ট্রেন।

অবস্থার দিক থেকে খুব একটা হেরফের নেই শহরের ধারিন্দা রেলগেট এলাকায় পুরসভার বরদাকান্ত শিশু উদ্যানেরও। এখানেও কয়েকবছর আগে চালু হওয়া দোলনা, টয় ট্রেন, জলাশয়ে বোটিং চালু হয়েছিল। টয় ট্রেন বন্ধ। কামরাগুলো ইতিউতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। পুরো চত্বর আগাছায় ভরে গিয়েছে। বোটিং করার নৌকা পাড়ে তুলে রাখা হয়েছে। বাগানের অধিকাংশ বাতিস্তম্ভ ভাঙা। বসার জন্য লোহার চেয়ারে মরচে ধরেছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, জেলা সদর হলেও তমলুকে শিশুদের খেলাধুলার কোনও বড় পার্ক নেই। নেই বয়স্কদের একটু সময় কাটানোর কোনও উদ্যান। তাই শহরে শিশু উদ্যান দু’টি ছোটদের পাশাপাশি বড়দের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল।

তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘বুদ্ধ পার্ক ও ধারিন্দার শিশু উদ্যান সংস্কার করা ছাড়াও শহরের প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে মোট ২০ টি নতুন শিশুউদ্যান গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকারের গ্রিন সিটি প্রকল্পে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’ তিনি আরও জানান, শহরে রূপনারায়ণের ধারে বাইপাস রাস্তা ও খেয়াঘাট যাওয়ার রাস্তায় বয়স্ক ও শিশুদের জন্য ছাউনি-সহ ৫০টি বসার জায়গা তৈরি করা হবে। স্টিমার ঘাট এলাকাও সাজিয়ে তোলা হবে।

ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement